গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘে হাজির এবার যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা, অভিযান ও হত্যা বন্ধে যতবারই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠেছে জাতিসংঘে, ঠিক ততবারই হয় ভেটো দিয়েছে, নয় ভোট পরিহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় এবার তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে ইসরায়েলের চরম মিত্র। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছে ওয়াশিংটন।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এমন একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছি যাতে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতের জন্য গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা আশা করি অন্যান্য দেশ এতে সমর্থন দেবে।

আরও পড়ুন:  ড. ইউনূসের ক্ষমতার লালসা নেই: কাদের সিদ্দিকী

বুধবার সৌদি আরবে স্থানীয় গণমাধ্যম আল হাদাথকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের এ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব একটি কঠোর বার্তা। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানের একটি বলিষ্ঠ ইঙ্গিত।

তবে, ইসরায়েলের হাত ছেড়ে দিচ্ছেন না জানিয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, আমরা অবশ্যই ইসরাইলের পাশে আছি এবং তাদের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতিও আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু একইসঙ্গে, যেসব বেসামরিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, যারা চরম দুর্দশায় আছেন—তাদের ওপরও আমাদের নজর দিতে হবে। এটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে প্রাধান্য দিতে হবে। বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে হবে এবং তাদের জন্য মানবিক সহায়তা জোগাড় করতে হবে।

ওইদিন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান ও দেশটির নেতা মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। এরপর মিশর ও ইসরাইলেও সফর করবেন তিনি।

আরও পড়ুন:  মুহুর্মুহু রকেট হামলায় বিপর্যস্ত মার্কিন রণতরী, বাধ্য হলো পিছু হটতে

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় আগ্রাসন শুরু করে দখলদার রাষ্ট্রটির সেনারা। এরপর থেকে হামাস উৎখাতের নামে ইসরায়েলি সেনারা সাড়ে ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। সঙ্গে আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার।

প্রসঙ্গত, গাজায় চলমান এই গণহত্যায় ইসরায়েলকে সরাসরি অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *