আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধুই জনগণের কল্যাণের জন্য, কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি হচ্ছে মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি।

আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রথমবার যারা ভোট দিতে যাবেন তাদের জীবনের প্রথম ভোটটি যেন ব্যর্থ না হয় সেজন্য তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য তরুণ সমাজের প্রতি এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট প্রদানের জন্য দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

বরিশাল বিভাগীয় সদরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেন, “আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, আর ওদের (বিএনপি-জামায়াত) রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের কি মানুষ চায়? মানুষ তাদের চায়না।”

বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে এবং শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ২০ ডিসেম্বর সিলেট থেকে শুরু হওয়া আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার সমাবেশ এবং ২৬ ডিসেম্বর রংপুর জেলার তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলায় অন্যান্য নির্বাচনী সমাবেশের মতো এদিনও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ধিক্কার জানাই ওই বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের কোন রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়। মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে আর ওদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের কি মানুষ চায়? মানুষ তাদের চায়না। আর তাদের দোসর হচ্ছে ’৭১ এর যুদ্ধাপরাধীরা যারা গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, ধর্ষণ ও অগ্নি সংযোগ করেছে, মানুষের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের  বিচার হয়েছে, শাস্তি হয়েছে, সেই জামায়াত। কাজেই খুনি, মানি লন্ডারিংকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীদের সাথে জুটেছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। এরা নির্বাচন চায়না, নির্বাচন বানচাল করতে চায়।

আরও পড়ুন:  এইচএসসির ফল প্রকাশ আজ, যেভাবে জানা যাবে

তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আহ্বান আপনারা ৭ তারিখে সকাল সকাল  সকলে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন মার্কাটা কি? জনতা চিৎকার করে বলে ওঠে ‘নৌকা’।

নূহু নবীর নৌকা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কৃপায় একদা মহাপ্লাবন থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন  ।
তিনি বলেন, এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েই আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে দক্ষিণাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সেটা মাথায় রেখে ‘ডেলটা প্ল্যান-২১০০’ অর্থাৎ ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের পরিকল্পনা আমরা করে দিয়েছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারবে। আর নৌকা মার্কায় ভোট দিলে তারাই পারবে আর কেউ পারবেনা। অগ্নি সন্ত্রাসী বা লুটেরা বা এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীরা কেউ পারবেনা -সে কথাটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:  উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে ঘূর্ণিঝড় `মিধিলি`

প্রধানমন্ত্রী এসময় বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে জনগণের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের প্রত্যেকের জন্য ভোট প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এবং এত দীর্ঘ সময় দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নয়নটা দৃশ্যমান হচ্ছে। যখন ওই জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি বরং বাংলাদেশ পেছনে চলে গিয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।

তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি-সে কথা  উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটাতেই আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, নতুন ভোটার যারা সেই নতুন ভোটারদের কাছে আমার আহ্বান, যারা প্রথমবারের মতো ভোট দিতে আসবেন তারা নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার প্রথম ভোটটি ব্যর্থ হোক, কাজেই আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে জয়যুক্ত করবেন।

তিনি বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। সেই ব্যথা বেদনা বুকে নিয়ে দেশের মানুষগুলোকে আমি আমার আপন পরিবার হিসেবে গ্রহণ করেছি। আর এই পরিবারকে কিভাবে রক্ষা করতে হবে, কিভাবে উন্নতি করতে হবে, আমি সেভাবেই  বাংলাদেশের মানুষকে দেখি এবং আপনাদের জন্যই আমি কাজ করে যাই, দেশকে উন্নত করতে চাই।

আরও পড়ুন:  প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গুরুত্ব

তিনি বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে সব হারিয়েও আমি বাংলাদেশে এসেছি। সে সোনার বাংলাদেশ আমি গড়তে চাই যে স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।  সেজন্য আমার জীবনে যত বাধাই আসুক। সব বাধা অতিক্রম করে আজকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাব। আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদ চাই। আপনাদের কাছে নৌকায় ভোট চাই।

প্রধানমন্ত্রী এসময় ভোট দেবেন কিনা, জানতে চাইলে উপস্থিত জনতা দুই  হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে নৌকায় ভোট প্রদানের অঙ্গীকার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *