ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে তপশিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার গতকাল বুধবার বিকেলে এই ভাষণ রেকর্ড করেছে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সাক্ষাৎ ও কমিশনের জরুরি বৈঠক শেষে গতকাল বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের জানান, তপশিলে নির্বাচনের তারিখসহ বিস্তারিত সময়সূচি থাকবে। আগামী ৮ বা ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট হতে পারে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সিইসির ভাষণ রেকর্ডকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকে নির্বাচন ভবনের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন ও চার নির্বাচন কমিশনার বৈঠকে বসেন। এরপর রওনা হয়ে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান তারা।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ অংশ নেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন তাঁর কার্যালয়ের সচিব খান মো. নূরুল আমীন এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী।
দুপুর ২টার দিকে বঙ্গভবন থেকে বের হন সিইসিসহ কমিশনের সদস্যরা। তবে সেখানে অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি তারা। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির এই সাক্ষাতের খবর সংগ্রহে বেলা ১১টা থেকে বঙ্গভবনের প্রবেশ গেটের সামনে অপেক্ষা করছিলেন বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মী।
সিইসির ভাষণ রেকর্ড
বঙ্গভবন থেকে নির্বাচন ভবনে ফিরে আসার পর নিজেদের মধ্যে আরেক দফা বৈঠকে তপশিল ও নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয় নিয়ে কথা বলেন কমিশন সদস্যরা। এরপর বিকেল ৪টায় সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়। পরে তপশিল ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন একাধিক কমিশনার। আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে কথা বলেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের প্রস্তুতির সার্বিক বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে হালনাগাদ তথ্য জানানো হয়েছে। ইসির কাজের অগ্রগতির প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সুষ্ঠু, সুন্দর ও অর্থবহ নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ সহায়তা দেবেন।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ও তাদের সদস্য সংখ্যার অবস্থা; জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের বিষয়; ব্যালট পেপারের নকশা ও রং এবং পোস্টাল ব্যালট কীভাবে ভোটারদের হাতে পৌঁছবে– এসব প্রক্রিয়া সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়েছে।
তপশিলের পর অনুমোদনহীন সমাবেশ হলে কঠোর ব্যবস্থা
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার পর অনুমোদনহীন ও বেআইনি জনসমাবেশ, মিছিল ও আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে কোনো ধরনের অবৈধ কর্মসূচির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ডিএমপি নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছে।
