ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে দেশটিকে সর্বোচ্চ ১০০টি উন্নতমানের রাফাল যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ফ্রান্স। সোমবার প্যারিসের কাছে ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আগমনের পর দুদেশের মধ্যে একটি ‘লেটার অব ইন্টেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জেলেনস্কি যৌথভাবে এ ঘোষণা দেন।
জেলেনস্কি জানান, রাফাল সরবরাহের প্রক্রিয়া আগামী দশ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে সম্পন্ন হবে। রাফালের পাশাপাশি ইউক্রেন এসএএমপি-টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, আধুনিক রাডার এবং স্মার্ট এয়ারিয়াল বোমাও পাবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ম্যাক্রোঁ বলেন, এটি আমাদের প্রতিরক্ষা খাতকে ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তায় নিয়োজিত করার নতুন পদক্ষেপ।
জেলেনস্কিও চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ অভিহিত করে ফ্রান্সের সহায়তাকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে উল্লেখ করেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাফাল যুদ্ধবিমান পাবে এই প্রতিশ্রুতি স্বল্পমেয়াদে যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে না। রুশ বাহিনী বর্তমানে পূর্ব ইউক্রেনে ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে এবং শীতের আগে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। রোববার রাতে খারকিভ অঞ্চলে রুশ হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে।
চুক্তি দেরিতে এলো কি না—এমন প্রশ্নে ম্যাক্রোঁ বলেন, এ ধরনের চুক্তি সবসময়ই কারও কাছে আগে, কারও কাছে পরে মনে হয়।
তিনি আরও জানান, ইউরোপ রাফাল কেনার অর্থায়নে এগিয়ে আসবে বলে তার আশা।
ইউক্রেন বর্তমানে বড় ধরনের অর্থ সংকটে রয়েছে। রাশিয়ার জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর সম্পদ ব্যবহার নিয়ে ইইউর ভেতর মতবিরোধ থাকায় আর্থিক সহায়তা আটকে আছে। তবে ম্যাক্রোঁ মনে করেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন না করেও এগোনোর পথ রয়েছে।
এদিকে রাফাল চুক্তি জেলেনস্কির জন্য রাজনৈতিক অর্জন হলেও দেশটির সাম্প্রতিক বহুল আলোচিত দুর্নীতি কেলেঙ্কারি তার জন্য বড় চাপ তৈরি করেছে। জ্বালানি খাতে ১০ কোটি ডলার দুর্নীতির অভিযোগে জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জ্বালানি খাতে পূর্ণ অডিট ও নতুন ব্যবস্থাপনার ঘোষণা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্বীকার করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আরও কঠোর হতে হবে।
দুর্নীতির ইস্যুতে প্রশ্ন তুললে ম্যাক্রোঁ বলেন, তিনি ‘জেলেনস্কির ওপর আস্থা রাখেন’ এবং তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কার করবেন।







