ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ জানিয়েছেন, তার দেশ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ম্যাখোঁর এই ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব।

বৃহস্পতিবার এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ম্যাখোঁর এই ঘোষণায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

কমপক্ষে ১৪২টি দেশ এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে বা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘এটি একটি বেপরোয়া সিদ্ধান্ত যা কেবল হামাসের প্রচারণায় সাহায্য করবে’।

তিনি এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, এটি ৭ই অক্টোবরের ভুক্তভোগীদের মুখে চপেটাঘাত। যা ২০২৩ সালে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের কারণ হিসেবে হামাসের হামলার কথাকে বুঝিয়েছে।

আরও পড়ুন:  গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৩৩০

প্রায় দুই বছর আগে হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইল গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করার পর থেকে বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

ম্যাক্রোঁর এই ঘোষণা ইসরাইলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করছে’ এবং ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করছে।’

নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, এ সিদ্ধান্তে ‘গাজার মতো আরেকটি ইরানপন্থি শক্তি গড়ে ওঠার ঝুঁকি আছে যা ইসরাইলের পাশে শান্তিতে বসবাসের জন্য নয়, বরং ইসরাইলকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার হবে।’

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হুসেইন আল-শেখ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এটি দেখায় যে ফ্রান্স আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার অধিকারকে সমর্থন করে।’

আরও পড়ুন:  সততার বীজ

হামাস ম্যাখোঁর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ‘এটি সঠিক পথে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার দাবিকে সমর্থন করে।’

হামাস আরও বলেছে, ‘বিশ্বের সব দেশকে, বিশেষ করে ইউরোপের যেসব দেশ এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি তাদের ফ্রান্সের পথ অনুসরণ করার আহ্বান জানাই।’

এদিকে, সৌদি আরব ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যান্য দেশকেও তা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।

আজ সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য আমরা প্রশংসা জানাই। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ফিলিস্তিনি জনগণের নিজ দেশে স্বাধীনভাবে বসবাস করার অধিকার ও স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার বিষয়ে সকলের ঐকমত্য হওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *