এবার ভিসা নিয়ে আরও কঠোর শর্ত আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাইয়ের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক গোপন স্মারকে বলা হয়েছে, যারা স্বাধীন মতপ্রকাশে সেন্সরশিপ-এর সঙ্গে জড়িত, তাদের ভিসা আবেদন বাতিল করা হতে পারে। এই পদক্ষেপের ফলে ভারত ও চীনসহ বহু দেশ থেকে কর্মী টানার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ভিসার প্রক্রিয়া আরও কঠিন হলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২ ডিসেম্বর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সব মিশনে পাঠানো ওই অভ্যন্তরীণ তারবার্তায় কনস্যুলার অফিসারদের এইচ-১বি আবেদনকারীদের বায়োডাটা বা লিংকডইন প্রোফাইল খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা দেখবেন, আবেদনকারীরা ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, কনটেন্ট মডারেশন, ফ্যাক্ট-চেকিং বা অনলাইন নিরাপত্তার মতো কাজে যুক্ত ছিলেন কি না।

আরও পড়ুন:  আরও ৪৮ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

গোপন তারবার্তায় আরও বলা হয়েছে, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় কোনো আবেদনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের সেন্সরশিপ বা সেন্সরশিপের চেষ্টায় দায়ী বা জড়িত ছিলেন, তবে ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের একটি নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী ওই আবেদনকারীকে অযোগ্য বলে গণ্য করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

এইচ-১বি ভিসার এই বর্ধিত যাচাই-বাছাইয়ের খবর, বিশেষত সেন্সরশিপ ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টি, আগে কখনো প্রকাশিত হয়নি। নতুন এই যাচাইয়ের শর্তাবলি নতুন এবং পুরোনো—উভয় ধরনের আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

তারবার্তায় আরও বলা হয়েছে, সব ধরনের ভিসার আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই এই নীতি প্রযোজ্য হলেও এইচ-১বি আবেদনকারীদের জন্য কঠোর পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তারা প্রায়ই প্রযুক্তি খাতে কাজ করেন, যার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা আর্থিক পরিষেবা সংস্থাগুলোও রয়েছে—যারা সুরক্ষিত মতপ্রকাশকে দমন করার কাজে লিপ্ত।

আরও পড়ুন:  বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করতে চান ট্রাম্প

ট্রাম্প প্রশাসন স্বাধীন মতপ্রকাশকে, বিশেষত অনলাইনে রক্ষণশীল কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে এনেছে। কর্মকর্তারা বারবার ইউরোপের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের দমন করার নিন্দা করে গেছেন। মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুমকি দিয়েছিলেন যে, যেসব লোক আমেরিকানদের মতপ্রকাশে বাধা দেবে, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই যথেষ্ট কড়া করেছে এবং গত সেপ্টেম্বরে এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন করে ফি আরোপ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *