বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে ২০১০ সালে আওয়ামী শাসনামলে গঠন হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই আদালতেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তবে এখন বড় যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো- এ রায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ওপর কী প্রভাব ফেলবে। শেখ হাসিনা এখনো দলটির প্রধান। রাজনীতিতে তাঁর ভবিষ্যতই বা কেমন রূপ নেবে?

মাসের পর মাস ধরে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর (প্রত্যর্পণের) দাবি জানিয়ে আসছে। আদালত অবমাননার মামলায় সাজা হওয়ার পরও তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভারত সেটির জবাব দেয়নি।

বিবিসির বাংলা বিভাগের সম্পাদক মীর সাব্বির লিখেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসে যদি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণে জোর দেয়, কিংবা ভারতে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো বন্ধে চাপ সৃষ্টি করে- তাহলে সেই নির্বাচিত সরকারের অনুরোধ উপেক্ষা করা ভারতের পক্ষে আরও কঠিন হতে পারে।

আরও পড়ুন:  চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপি কর্মী নিহত

রায় ঘোষণার আগেই আদালত গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করেন। আওয়ামী লীগ এর নিন্দা জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে দলটির কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করেছে।

সরকার উৎখাতের পর থেকে আওয়ামী লীগ মূলত রাজনীতির ময়দানে প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। দলের শীর্ষ নেতাদের বেশির ভাগই নির্বাসনে আছেন। কেউ ভারতে গেছেন আবার অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

এই রায়ের পর যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে দলটি বেশ চাপের মুখে পড়বে। যদিও দলটি বলছে, নেতৃত্ব নিয়ে কোনো অভ্যন্তরীণ বিতর্ক নেই। তবে এখন দেখার বিষয়- বাড়তে থাকা আইনি সীমাবদ্ধতা ও প্রত্যর্পণের কূটনৈতিক চাপের কারণে আগামী দিনগুলোতে দলটি ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য হয় কি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *