পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট) এভারেস্টের চূড়ায় উঠে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন গত ১ এপ্রিল। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন চট্টগ্রামের বাবর আলী। আজ ১৯ মে নেপালের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটায় তিনি চূড়ায় পৌঁছান।
বাংলাদেশ থেকে বাবর আলী নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন গত ১ এপ্রিল। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে ৪ এপ্রিল কাঠমান্ডু থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এরপর পথচলা শুরু করেন এভারেস্ট বেজক্যাম্পের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছান ১০ এপ্রিল।
ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এভারেস্ট অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এ জন্য একাধিকবার উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন বাবর। ২৬ এপ্রিল বেজক্যাম্প থেকে এভারেস্টের ক্যাম্প ২ পর্যন্ত ঘুরে এসে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত করেন। এরপর অনুকূল আবহাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয় বাবরকে।
১৪ মে মাঝরাতে বেজক্যাম্প থেকে বাবরের যাত্রা শুরু হয় চূড়া অভিমুখে। প্রথম দিনেই সরাসরি উঠে যান ক্যাম্প ২-এ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেখানে দুই রাত কাটিয়ে বাবর ১৮ মে উঠে যান ক্যাম্প ৩ এবং ১৯ মে পৌঁছান ক্যাম্প ৪-এ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতার এই ক্যাম্পের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’।
এর আগে, নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগের দিন ৩১ মার্চ চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন বাবর আলী। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’ আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, ‘বেশির ভাগ পর্বতারোহীই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে দাঁড়িয়ে পৃথিবী দেখার স্বপ্ন দেখেন। আমিও দেখছি। আমি চ্যালেঞ্জিং আর নতুন কিছু করতে পছন্দ করি। তাই এবার এভারস্টের সঙ্গে লোৎস জয় করার স্বপ্ন দেখছি। পুরো অভিযানে সময় লাগবে দুই মাস। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মে মাসের ৩য় সপ্তাহ কিংবা শেষ সপ্তাহে চূড়ায় আরোহণ করতে পারি।’
নেপাল-তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত ২৯ হাজার ২৮ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টে অভিযান নিঃসন্দেহে দুরূহ একটা কাজ। একই অভিযানে ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উচ্চতার মাউন্ট লোৎসে আরোহণের প্রচেষ্টাকে করেছে আরও চ্যালেঞ্জিং। উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে বাবর আলীর পর্বতারোহণে পথচলা শুরু। চট্টগ্রামের পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এ ক্লাবের হয়েই গত দশ বছরে হিমালয়ের নানান শিখরে অভিযান করেছেন তিনি।
তিনি ২০১৭ সালে ভারতের উত্তরকাশীর নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম ও টেকনিক্যাল চূড়া আমা দাবলাম (২২,৩৪৯ ফুট) আরোহণ করেন বাবর। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশাও, তবে পরে সেই চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশে ঘোরায় মনোযোগী হয়েছেন।
@dakdiyejai.news @ডাকদিয়েযাই
#dakdiyejai.news #ডাকদিয়েযাই