মোহাম্মদ ফয়সাল আলম:
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ৪০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৮৩ পয়সা হিসেবে)।
এই ঋণ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (২০২৩-২০৫০) বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু কেন্দ্রিক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সহায়তা বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ও দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) উল্লেখ করেছে যে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে বার্ষিক গড় ক্ষতি প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। এই প্রেক্ষাপটে, এডিবির ৪০ কোটি ডলারের ঋণ বাংলাদেশকে জলবায়ু-টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রথম উপ-প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
এই অর্থায়ন বাংলাদেশের জলবায়ু মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, কম কার্বন অর্থনীতিতে রূপান্তর, এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। এছাড়াও, এই প্রোগ্রাম লিঙ্গ সমতা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিকে মূলধারায় আনার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা সমগ্র সমাজের জন্য একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্ট ইকোনমিস্ট আমিনুর রহমান বলেন, “জলবায়ু ধাক্কা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। তবে বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং এডিবিও এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতি এবং এডিবির সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে সীমিত করতে এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই সহযোগিতা অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য জলবায়ু অর্থায়নকে একত্রিত করার জন্য একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক এবং নীতিগত পরিবেশ তৈরি করা, যা বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এজেন্ডায় জলবায়ু কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেবে। এর মাধ্যমে সরকারকে কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও অবকাঠামো, নগর উন্নয়নসহ জলবায়ু-সমালোচনামূলক খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও সক্ষম হবে। একই সঙ্গে, দেশের বিভিন্ন খাতের মধ্যে জলবায়ু কেন্দ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সমন্বয় সাধন করতে পারবে।