কাদের জোরে এমন ত্রাস চালায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা?

বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাই করে ফের আলোচনায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি থাকা ২৩ নাবিক ও ক্রু’কে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করছে তারা। তবে এটাই প্রথম ঘটনা নয়। আগেও একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজও কয়েক বছর আগে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিলো। তাছাড়া এই নৌপথে প্রতিনিয়তই এমন দস্যুতার ঘটনা ঘটে। 

প্রথমে পছন্দ মতো নানা হিসেব মিলিয়ে একটি জাহাজকে টার্গেট করে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। মূলত পণ্যবাহী জাহাজকেই নিজেদের লক্ষ্যবস্তু বানায় এরা। আন্তর্জাতিক নৌরুটে চলাচল করা পণ্যবাহী জাহাজের গতি যেমন সাধ্যের মধ্যে থাকে। তেমন পাল্টা আঘাতের ঝুঁকিও থাকে কম। ১৮ থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলা এসব জাহাজে হুট করেই পরিকল্পনা মতো নৌকা নিয়ে উঠে যায় দস্যুরা। তাদের কাঁধে ঝোলানো থাকে একে-৪৭ এর মতো মারণাস্ত্র। ফলে তাদের সামনে নাবিকরাও অসহায় হয়ে পড়েন। বাধ্য হন দস্যুদের কথা মতো জাহাজ চালাতে।

আরও পড়ুন:  ঢাবির বহিষ্কৃত ছাত্রদের তালিকায় সাদ্দাম-ইনানসহ আরো যাদের নাম

এরপর শুরু হয় দস্যুদের আসল খেলা। জিম্মি করা নাবিকদের দিয়েই তারা কাঙ্ক্ষিত মুক্তিপণের বিষয়টি জানায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে। ফোনে নিজ পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও দেয় জিম্মিদের। এরপর তাদের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়। যাতে স্বজনদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বাড়ে; বিপরীত প্রান্তে ভয়ংকর রকম ভীতি তৈরি হয়।

অপহৃতদের সোমালিয়ার জঙ্গলে বন্দী করে রাখা হয়। হাঁকা হয় বিশাল মুক্তিপণ। চলে দর কষাকষি। মুক্তিপণ না পাওয়া পর্যন্ত অপহৃতদের জঙ্গলেই আটকে রাখা হয়। বন্দীদের খুব একটা খাবারও দেয় না দস্যুরা।

বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, সোমালিয়ায় একটি ‘জলদস্যু শেয়ারবাজার’ও আছে। সেখানে বিনিয়োগকারীরা সম্ভাব্য অভিযানের শেয়ার কেনে। ৭২টির বেশি জলদস্যু গ্রুপের সমন্বয়ে এই শেয়ারবাজার গঠিত। এসব গ্রুপকে তারা ‘সামুদ্রিক কোম্পানি’ বলে থাকে।

আরও পড়ুন:  কোথায় সব প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীরা

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের পকেটে যায় এই দস্যুবৃত্তির অধিকাংশ অর্থ। মুক্তিপণ পাওয়া গেলে সবার আগে বিনিয়োগকারী ও আরও কিছু স্টেকহোল্ডার তাদের ভাগের অর্থ কেটে রাখে। এ ছাড়া বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পরিচালনার মতো কাজে সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়কে কিছু অর্থ দেওয়া হয়। বাকি যা থাকে, তা অভিযানে অংশ নেওয়া জলদস্যুরা ভাগ করে নেয়।

এই শেয়ারবাজারের মহাজনরাই মূলত সোমালিয়ার জলদস্যুদের চালিকা শক্তি। তাদের কাছ থেকে যেমন দস্যুরা অস্ত্র পায়, তেমন পায় নানা রকম সহায়তাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *