বুধবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সন্দ্বীপের ভোটারদের কথা শুনবেন প্রধানমন্ত্রী

আগামীকাল (৩ জানুয়ারি) বুধবার বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাজধানীর তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন প্রান্ত থেকে ৫টি জেলা ও ১টি উপজেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করবেন।  

আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, শেখ হাসিনা পর্যায়ক্রমে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলা, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা ও মহানগর, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, কুমিল্লা উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও মহানগর এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল জনসভা উপলক্ষে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে যথাযথ পদক্ষেপ।

উক্ত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা/থানা/পৌর আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন/ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নির্বাচনী এলাকাসমূহের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।

নির্বাচনকে ঘিরে চট্টগ্রাম-৩, সন্দ্বীপ আসন নিয়ে রয়েছে বাড়তি আলোচনা। প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে সন্দ্বীপের নাম। বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে সন্দ্বীপে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেছে সরকার। এছাড়া এই জনপদকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা। এর মধ্যে অনেক বাস্তবায়নও হয়েছে। কিছু বাস্তবায়নের পথে। এই আসনে নৌকার প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্বাচিপের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী।

আরও পড়ুন:  আশংকা ছিল এ ধরনের একটা আঘাত আসবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিল্পব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সন্দ্বীপবাসীর সঙ্গে কথা বলবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় নেতাকর্মী, প্রার্থীরা ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা শুনবেন তিনি। মূলত সরকারের মেয়াদে নেওয়া উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী।

সন্দ্বীপে এবার নির্বাচনী মাঠে আছেন আট প্রার্থী। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকে সন্দ্বীপ-৩ আসনের বর্তমান এমপি ও নৌকার প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং স্বাচিপের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী আলোচনায় আছেন। হেভিওয়েট এই দুই প্রার্থীকে ঘিরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্দ্বীপের নির্বাচনী হাওয়া।

নৌকার প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, ‘সরকারের টানা মেয়াদে সন্দ্বীপে নানা উন্নয়ন হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে সন্দ্বীপের রাস্তাঘাট, বাজার, স্কুল, মন্দির-মসজিদে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দ্বীপবাসী এর সুফল ভোগ করছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও আমাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। জনগণ আমার সঙ্গে আছে।’

আরও পড়ুন:  ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই একসময় খেসারত দিতে হবে’

স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জামাল বলেন, ‘সন্দ্বীপের মানুষ পরিবর্তন চায়। নির্বাচনী প্রচারে যেখানেই যাচ্ছি সেখানে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কারা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাচ্ছে তা সবাই জানে। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়।

জামালের আশ্বাস ‘জয়ী হলে সন্দ্বীপের নৌ পরিবহন খাতের সমস্যা সমাধান, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং মাদকমুক্ত সন্দ্বীপ গড়ে তুলবেন তিনি।

জাতীয় সংসদের ২৮০, চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ সংসদীয় আসন ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ ও একটি পৌরসভা নিয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ গঠিত। এই উপজেলার মোট ৮৪টি ভোট কেন্দ্র ও মোট বুথ ৫৭২টি। আগামি ৭ জানুয়ারি এই জনপদের ২,৪১,৯১৪ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ কেন্দ্র করে সন্দ্বীপে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর জেরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। যার প্রভাব পড়ছে এবারের নির্বাচনে। যেহেতু কেন্দ্র থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই, সেহেতু এ নির্বাচন কেন্দ্র করেই সন্দ্বীপের ‘বঞ্চিত’ বেশ কয়েক সিনিয়র নেতা মিতার নৌকা ঠেকাতে কাজ করছে। মূলত দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ থেকেই দুই প্রার্থীকে কেন্দ্র করে অনুসারীরা প্রতিদিনই হামলা-পাল্টা হামলা, সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ছেন। পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়ও মামলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *