মঙ্গল গ্রহে রোভার চালিয়ে ইতিহাস ভারতীয় তরুণীর

ছোটবেলা থেকেই রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন অক্ষতা কৃষ্ণমূর্তি। ১৩ বছর আগে সেই স্বপ্ন বুকে নিয়েই আমেরিকা যান অক্ষতা। আজ নাসায় বসে মঙ্গলের মাটিতে রোভার নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। নাসার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ‘রকেট সায়েন্টিস্ট’ অক্ষতা কৃষ্ণমূর্তির এগিয়ে চলার গল্প রূপকথাকেও হার মানাবে।

খুব ছোটবেলা থেকেই আকাশের দিকে চেয়ে মুগ্ধ হতেন অক্ষতা। স্বপ্ন ছিল, এক দিন আকাশের চরিত্রদের নিয়ে কাজ করবেন। নাসায় চাকরি করবেন। কিন্তু ছেলেবেলা স্বপ্ন দেখা আর বড় হয়ে সেই স্বপ্নকে সত্যি করা- এর মধ্যে ফারাক কয়েক আলোকবর্ষের। ছোট্ট অক্ষতা তা বুঝতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু বড় হওয়ার পথ তাকে বলে দিয়েছিল, সে লড়াই কতটা কঠিন হতে চলেছে।

কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্রী নন অক্ষতা। জীবনের প্রথম দিন থেকে যে স্বপ্নকে সর্বস্ব দিয়ে লালনপালন করে এসেছেন, সেই স্বপ্নকেই অক্ষত অবস্থায় বাস্তবের রূপদানেও চূড়ান্ত সফল তিনি। আজ তিনি নাসার স্থায়ী চাকরিজীবী। মঙ্গলের বুকে নাসার যে রোভার গড়গড়িয়ে চলে ফিরে বেড়াচ্ছে, তার চাবিকাঠি এই ভারতীয় বৈজ্ঞানিকের হাতে।
শুধু কি মঙ্গল? অক্ষতা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছেন নাসার আরও একাধিক মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত ‘হাই ভোল্টেজ’ প্রকল্পের রূপায়ণে। আর তা করতে গিয়ে অক্ষতা হয়ে উঠেছেন প্রথম ভারতীয় নারী, যিনি নাসার ড্যাশবোর্ডে বসে মঙ্গলগ্রহে রোভারের পরিচালনা করলেন সফল ভাবে। যা এত দিন ছিল অভূতপূর্ব।

আরও পড়ুন:  দাম্পত্য জীবনের বিশ্বরেকর্ড

আজ থেকে ১৩ বছর আগে নাসায় প্রথম চাকরিতে ঢোকেন অক্ষতা। তিনি লিখেছেন, ১৩ বছর আগে নাসায় কাজে যোগ দেই। মঙ্গলগ্রহে বিজ্ঞান এবং রোবোটিক্স অপারেশনের অংশ হব, এই স্বপ্ন ছাড়া আরও কোনও কিছুই তখন আমার মাথায় ছিল না। যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আমার কথা শুনে প্রত্যেকেই বলেছিলেন, এই কাজ আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি যেন নিজের ‘ফিল্ড’ বদল করে নিই।’

কিন্তু অক্ষতাকে ভয় পাওয়ানো যায়নি। নিজের রাস্তা থেকে একচুলও সরেননি নাসার রকেট বিজ্ঞানী। কারও কথা না শুনে, তিনি নিজের কাজে আরও মনোনিবেশ করেন। লড়াইটা যেন এক ধাক্কায় আরও খানিকটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল অক্ষতার কাছে। অক্ষতার মতে, বাইরের লোকের কথা না শুনে স্রেফ নিজের কাজটা মন দিয়ে করে যেতে হবে। তাহলেই দিনের শেষে আপনার সমালোচকদের আপনি ভুল প্রমাণ করার জায়গায় পৌঁছতে পারবেন।

আরও পড়ুন:  টিয়ার শেল থেকে বাঁচতে করণীয়

অক্ষতা তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ (এমআইটি) থেকে। তারপর ক্রমশ নাসায় স্থায়ী রকেট বিজ্ঞানী হিসাবে জায়গা করে নেন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *