ক্ষমতাচ্যুতির পর শেখ হাসিনার কণ্ঠে পরিবর্তনের সুর। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবর শুনে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত থাকার প্রমাণ পাননি বলে জানিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আইএএনএস লাইভ ডটকমে গত মঙ্গলবার শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণসহ এই সাক্ষাৎকারে ১১টি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। ইমেইলে আইএএনএস জানতে চায়, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি।
আরেকটি প্রশ্ন ছিল, গুজব রয়েছে আপনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল। আপনার প্রতিক্রিয়া কী? উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। এখন পর্যন্ত এর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করলে স্থিতিশীলতা, জবাবদিহি ও জাতীয় ঐক্য পুনরুদ্ধারের বাস্তব কাজ থেকে মনোযোগ সরে যেতে পারে।’
অথচ এর আগে ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের খবরে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সেন্টমার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিলে আমি ঠিকই ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।’
আইএএনএসের প্রশ্ন ছিল, আপনি কি মনে করেন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী বিদেশি শক্তির সঙ্গে কাজ করছে? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি অতিরিক্ত অনুমান করতে চাই না। তবে আমাদের জাতীয় বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপের উদ্বেগজনক লক্ষণ আছে। আমি বারবার দেশের বিভেদকে কাজে লাগানো বিদেশি মধ্যস্থতার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছি। বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠলে তা স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করা উচিত। বাংলাদেশকে অবশ্যই নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ও সার্বভৌম ইচ্ছায় সমস্যা সমাধান করতে হবে; বাইরের প্রভাবে নয়।’
শেখ হাসিনার এই কথাও আগের বক্তব্যের সঙ্গে মিলছে না। আনন্দবাজার পত্রিকা এর আগে অডিও বার্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এসব ইউনূসের কারসাজি। হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে, বিদেশিদের থেকে টাকা খেয়ে দেশের সর্বনাশ করছেন।’
আইএএনএস প্রশ্ন করে, কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নির্যাতন সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তদন্ত এবং সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত দোষ নির্ধারণ করা উচিত। ব্যাপক দাবি যথাযথ, নিরপেক্ষ তদন্তের বিকল্প হতে পারে না।’
আইসিটির রায়কে আগের মতোই ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই রায় পূর্বনির্ধারিত।’ আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের লাখ লাখ সমর্থক সম্ভবত বাড়িতেই থেকে যাবেন। আপনি দেশের জনপ্রিয় দলকে নিষিদ্ধ করে তাকে অবাধ ও নিরপেক্ষ বলে উপস্থাপন করতে পারেন না।’







