আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর)। ‘জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রতিটি মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এরপর থেকে সারাবিশ্বেই এই দিনে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।

‘হিউম্যান রাইটস: আওয়ার এভরিডে এসেনসিয়ালস’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো মানববন্ধন ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধনের গড় হার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ এখনো অর্ধেক মানুষকে নিবন্ধন না থাকার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিবন্ধনহীনতা দেশে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, মানবপাচারসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে ত্বরান্বিত করছে। একইভাবে, মৃত্যু নিবন্ধন না থাকায় উত্তরাধিকার প্রমাণে জটিলতা সৃষ্টি হয়। আত্মীয়দের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। বর্তমানে দেশে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের মৃত্যু নিবন্ধন নেই। বিশেষ করে গ্রাম, চরাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা ও নগরের বস্তি এলাকায় এই হার অনেক কম।

আরও পড়ুন:  ৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে কড়াইল বস্তির আগুন

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ সংস্কার করে পরিবারের পরিবর্তে সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিবন্ধনের দায়িত্ব দিলে, দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। এতে সিআরভিএস দশকের শতভাগ নিবন্ধন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং এসডিজি ১৬ দশমিক ৯ (সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র) অর্জন ত্বরান্বিত হবে।

গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন শুরু হয় পরিচয়হীনতা থেকে। আইন সংস্কারের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম জনবান্ধব করতে হবে, যাতে কোনো মানুষই পরিচয়হীন না থাকে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ সকল মৌলিক অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *