প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন স্থগিত, রোববার থেকে পরীক্ষা

তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য তিন দফা দাবি আদায়ে বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের চলমান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আগামী রোববার থেকে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।

আরও পড়ুন:  গত এক দশক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সফল দশক ছিল

এতে আরও বলা হয়, আগামী রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন বা বার্ষিক পরীক্ষা চলবে। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী কমসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিন দফা দাবি আদায়ে গত ২৭ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। এরপর ১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। ২ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেন।

শিক্ষকদের এমন কর্মসূচিতে সারাদেশের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটে। কোথাও কোথাও উপজেলা প্রশাসন ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষা নিলেও তাতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন:  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭০০০ শিক্ষক নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে কবে?

এমন পরিস্থিতিতে দফায় দফায় সরকারি চাকরিবিধি ও ফৌজদারি আইনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ার দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এরপরও শিক্ষকরা কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় শাস্তিমূলক বদলির পথে হাঁটে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া চার নেতাসহ কয়েকশো শিক্ষককে রীতি ভেঙে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়। এরপরই শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা এলো।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সহকারী শিক্ষক।

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। তবে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তারা এ নিয়ে অসন্তুষ্ট। গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *