জিহ্বা সংযত রাখুন, ভালো থাকুন

মানুষ বাক্‌শক্তিসম্পন্ন প্রাণী। একই সঙ্গে মানুষ সামাজিক জীব। মানুষ ভাষার মাধ্যমে মনোভাব প্রকাশ করে, তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করে। আল্লাহতায়ালা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘দয়াময় রহমান কোরআন শেখাবেন বলে মানুষ সৃষ্টি করলেন, তাকে বয়ান (ভাষা ও ভাব প্রকাশ) শিক্ষা দিলেন।’ -সূরা আর রহমান: ১-৪

কথা বলার আদব-কায়দা অনুসরণের বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেন, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে।’ -সূরা কাফ: ১৮

কোরআনে কারিমের আরও অনেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মানুষের সঙ্গে সদালাপ করবে।’ -সূরা বাকারা: ৮৩

‘তুমি সংযতভাবে পদক্ষেপ করো এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করো; নিশ্চয় গাধার স্বরই সবচেয়ে অপ্রীতিকর।’ -সূরা লোকমান: ১৯

‘হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো, তবে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করে, অবশ্যই তারা মহাসফলতা অর্জন করবে।’ -সূরা আহজাব: ৭০-৭১

আরও পড়ুন:  রোজা নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা

অন্যদিকে মুমিন বান্দাদের পরিচয় সম্পর্কে কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘আর রহমানের বান্দা তারাই, যারা জমিনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।’ -সূরা ফুরকান: ৬৩

‘তুমি ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন করো, সৎকাজে নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদের এড়িয়ে চলো।’ -সূরা আরাফ: ১৯৯

ইসলামের শিক্ষা হলো, কথা ও কাজে মিল থাকা অপরিহার্য। মানুষে মানুষে জ্ঞানে, চিন্তা-দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে পার্থক্য ও মতভিন্নতা থাকতে পারে। তবে নিজের কথা, নিজের অবস্থান বা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বলা বা কর্ম সম্পাদন করা অগ্রহণযোগ্য ও গর্হিত অন্যায়। কোরআনে হাকিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা করো না, তা বলো কেন? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর কাছে চরম অসন্তোষজনক।’ -সূরা ছফ: ২-৩

আরও পড়ুন:  মেসির একাধিক গোল মিস, তবু্ও জয় দিয়ে শুরু আর্জেন্টিনার

মানুষের কথা ভালো ও মন্দ পরিণতি নিয়ে তার কাছেই ফিরে আসে। তাই মুমিন তার বাক্য ব্যয়ে সংযত হয়ে থাকে। সে মন চাইলে কোনো কথা বলে না। যেসব কারণে ইসলাম কথায় সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তা হলো-

জিহ্বা সংযতকারীর জন্য জান্নাত: যারা নিজের জবান সংযত করতে পারবে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তার জন্য জান্নাতের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই রানের মধ্যবর্তী অঙ্গের (লজ্জাস্থান) সংযত রাখার নিশ্চয়তা আমাকে দেবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদার। -সহিহ বোখারি: ৬৪৭৪

কল্যাণকর কথা মুমিনের বৈশিষ্ট্য: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে যেন কল্যাণকর কথা বলে অথবা চুপ থাকে। -সহিহ বোখারি: ৬১৩৬

আরও পড়ুন:  সর্বজনীন পেনশন বাতিলের দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে রাবিপ্রবি শিক্ষকরা

বেশি কথায় বেশি ভুল: হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি বেশি কথা বলে তার ভুল বেড়ে যায়। যার ভুল বেড়ে যায় তার পাপ বেড়ে যায়। আর যে বেশি পাপ করে সে জাহান্নামের পথে বেশি এগিয়ে যায়। -ফয়জুল কাবির: ৮৯৯০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *