ঢাকায় ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে সাড়ে ৮ লাখ ভবন ধসে পড়বে

নরসিংদীর মধুপুর ফল্টে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানীর সাড়ে ৮ লাখ ভবন ধসে পড়বে। এমনটি হলে রাজধানীতে প্রায় ২ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে

গবেষণায় আরও বলা হয়, এ জন্য ভবনের ঝুঁকি নিরীক্ষার ক্ষমতা শুধু রাজউকের হাতে সীমাবদ্ধ না রেখে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আর ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় ট্রাস্ট গঠনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে আবারও স্পষ্ট হয়েছে ঢাকার বিপর্যয়ের শঙ্কা। ৬-এরও কম মাত্রার সেই ভূকম্পনে দীর্ঘক্ষণ দুলতে থাকে রাজধানীর অনেক ভবন। সারা দেশে প্রাণ হারান অন্তত ১০ জন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়।

আরও পড়ুন:  গ্যাস উত্তোলন নয়, টেকটোনিক চাপেই দেশে ভূমিকম্প বাড়ছে

সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ভূমিকম্প বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় রাজউকের গবেষণার তথ্য জানিয়ে বলা হয়, দিনের বেলা মধুপুর ফল্টে প্রায় ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেই ধসে পড়বে ৮ লাখ ৬৫ হাজার ভবন। এতে প্রাণ হারাবেন দুই লাখের বেশি মানুষ। আর্থিক ক্ষতি ছাড়াবে ২৫ বিলিয়ন ডলার। তবে সিলেট ফল্টের ভূমিকম্পে ক্ষতি কিছুটা কম হবে।

বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নিয়ে আর বসে থাকার সুযোগ নেই।

বুয়েটের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন ফিল্ডটাই তো খুব ডিফিকাল্ট। রাজউকের সেই ক্যাপাসিটিই নেই। ইক্যুইপমেন্ট দিলেও এটা বাড়বে না। থার্ড পার্টিকে দিয়ে, সে যদি সার্ভে করে প্রতি তলায় তলায়, তাহলে সেটা কম্পাইল করে আমরা সেই ভবনকে সার্টিফিকেট দিয়ে দিতে পারি।’

আরও পড়ুন:  বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা অজিদের

ভবন নিরীক্ষায় বেসরকারি কোম্পানিকে যুক্ত করতে বিশেষ আদেশ জারি করার পরামর্শ দেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পাশাপাশি পুরান ঢাকা সংস্কার আবারও শুরু করার তাগিদ দেন তিনি।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘বড় কিছু যে হতে পারে, এটার একটা বার্তা এসেছে। আমরা যেন প্রস্তুত থাকতে পারি, সেটার জন্য প্রত্যেকেই আমরা রাজউক এবং অন্যান্য সংস্থাকে সহায়তা করি। আমি মনে করি, রাজউকের পাশাপাশি সার্ভিস প্রোভাইডার যারা আছে—ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, ডেসা, গ্যাস—তাদেরও সচেতন করতে হবে। যদি এ রকম হয়, তাহলে গ্যাসের লাইনটা কোথা থেকে বন্ধ করতে হবে, প্রতিটি এলাকায় কিছু ভলান্টিয়ার তৈরি করতে হবে।’

আদিলুর রহমান খান জানান, ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রস্তুতির পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়—এটা নিয়েই আমরা কথা বলছি এবং এটিকে কার্যকর করার চেষ্টা করছি, যাতে দেশের মানুষ যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ভূমিকম্পের ক্ষেত্রেও, প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও, ঝুঁকি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেও আমরা এটা পালন করতে পারব।’

আরও পড়ুন:  রাজধানীতে ঝুম বৃষ্টি, ঘনঘোর অন্ধকার

আলোচনায় রাজউক চেয়ারম্যান জানান, নিরাপদ ভবন নির্মাণ নিশ্চিতে নতুন একটি কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *