ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে টাইাগাররা। প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ১৬ ও ১৪ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৫১ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। তানজিদ ৬২ বলে ৮৯ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বল হাতে এ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন পেসার রোমারিও শেফার্ড।

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ ওভারে ২২ রান তোলে স্বাগতিক বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে বিচ্ছিন্ন হয় বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। ১ ছক্কায় ৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার রোস্টন চেজের শিকার হন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।

তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক লিটন দাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার খারি পিয়েরের বলে গুদাকেশ মোতিকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৬ রান করা লিটন।

৪৪ রানে ২ উইকেট হারানার পর জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন ওপেনার তানজিদ হাসান ও মিডল অর্ডার ব্যাটার সাইফ হাসান। ১০ ওভারে দলের রান ৬৭তে নেন তারা।

আরও পড়ুন:  ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, ৫ জনের প্রাণহানি

১১তম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে দশম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তানজিদ। এজন্য ৩৬ বল খেলেছেন এই বাঁ-হাতি ওপেনার।

১৫তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শ’তে নেন তানজিদ ও সাইফ। ১শ’পার হওয়ার পরই বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে পরের ডেলিভারিতে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হন সাইফ। ২টি ছক্কায় ২২ বলে ২৩ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ৪৩ বলে ৬৩ রান যোগ করেন তানজিদ-সাইফ।

দলীয় ১০৭ রানে সাইফ ফেরার পর টানা চার ওভারে চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেন ৩, নুরুল হাসান সোহান, নাসুম আহমেদ ১ ও জাকের আলি ৫ রানে ফেরেন।

সতীর্থরা যাওয়া-আসার মিছিলে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তানজিদ। কিন্তু শেফার্ডের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে মিড অফে হোল্ডারকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তানজিদ। ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন তিনি। পরের বলে শরিফুল ইসলামকে শিকার করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন শেফার্ড।

কারণ ১৭তম ওভারের শেষ বলে সোহানকে শিকার করেছিলেন তিনি। এরপর ২০তম ওভারের প্রথম দুই বলে তানজিদ ও শরিফুলকে আউট করেন শেফার্ড। হোল্ডারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করলেন শেফার্ড।

আরও পড়ুন:  হোয়াইট ওয়াশ এড়ালো বাংলাদেশ

শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯ রান তুলে লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান করে টাইগাররা। বাংলাদেশের হয়ে তানজিদ ও সাইফ ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দুই অংকের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ রান করে করেন পারভেজ ও তাসকিন আহমেদ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেফার্ড ৩টি, হোল্ডার ও পিয়েরি ২টি করে উইকেট নেন।

১৫২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারে উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১ রান করে স্পিনার মাহেদি হাসানের বলে স্টাম্পড আউট হন ক্যারিবীয় ওপেনার অ্যালিক আথানাজে।

শুরুতে সতীর্থকে হারালেও পাওয়ার প্লের সুবিধা নিতে দ্বিতীয় উইকেটে ১৭ বলে ৩১ রান যোগ করেন আরেক ওপেনার আমির জাঙ্গু ও ব্রান্ডন কিং। ৮ রান করা কিংকে বোল্ড করে জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।

উইকেটে সেট হয়ে বাংলাদেশের ইনফর্ম স্পিনার রিশাদ হোসেনের বলে আউট হন দুইবার জীবন পাওয়া জাঙ্গু। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ বলে ৩৪ রান করেন তিনি।

৫২ রানে ৩ উইকেট পতনের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের পথ সহজ করেন অধিনায়ক রোস্টন চেজ ও আকিল আগস্তে। রিশাদের করা ১৩তম ওভারে ৩ ছক্কায় ২১ রান নেন আগস্তে। ১৫ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৪৩ রান তুলে বড় জয়ের অপেক্ষা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ১৬তম ওভারে চেজ ও আগস্তেকে শিকার করেন রিশাদ। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় চেজ ২৯ বলে ৫০ রান করেন। ২৫ বলে ৫০ রান করতে ১টি চার ও ৫টি ছক্কা মেরেছেন আগস্তে।

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশকে ৮ উইকেটের হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ আটকাল জিম্বাবুয়ে

শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ উইকেটে বাকী ৮ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিশ্চিত করেন রোভম্যান পাওয়েল ও মোতি। পাওয়েল ৫ ও মোতি ৩ রানে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের রিশাদ ৪৩ রানে ৩ উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ১৫১/১০, ২০ ওভার (তানজিদ ৮৯, সাইফ ২৩, শেফার্ড ৩/৩৬)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৫২/৫, ১৬.৫ ওভার (চেজ ৫০, আগস্তে ৫০, রিশাদ ৩/৪৩)।

ফলাফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *