অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সংকটের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী, নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, দুটি ব্যালট থাকবে, একটি গণভোটের জন্য।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, মনে আছে, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল ১৭ তারিখ। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে স্বাক্ষর করলাম। কিন্তু যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেলো অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে আমরা যে ‘নোট অব ডিসেন্ট’গুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি। তাই আমরা বলেছি, ‘ইটস অ্যা ব্রিচ অব ট্রাস্ট’। অথচ তারা সেই আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে। জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা বলে বিএনপি সংস্কার চায় না, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। বিএনপি সব সময় সংস্কারের পক্ষে। আগে ১০ দফা, পরে ২৭ দফা, এরপর ৩১ দফা দিয়েছে, সবই সংস্কারের জন্য। আমরা প্রত্যেকটি সভায় উপস্থিত থেকেছি, আলোচনা করেছি, শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যের সনদে সই করেছি। বিভ্রান্তি যদি আসে, সেটা ঐকমত্য কমিশনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে এসেছে।
নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচন করবো, নির্বাচন করতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু আজকে সেই নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি মহল উঠে-পড়ে লেগেছে, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, দুটি ব্যালট থাকবে, একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদের জন্য। এই বিষয়ে কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা এই নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করবো জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। এক সময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকে জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতি ক্ষমা করে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।







