সন্দ্বীপের সাবেক সাংসদ মুস্তাফিজুর রহমানের ২৪তম মৃত্যুবাষির্কী আজ

সন্দ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমানের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০১ সালের ২০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বিবি আমেনা এবং পিতা মৌলভী হাবিবুর রহমানের একমাত্র পুত্র। মেধাবী ছাত্র হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে সরকারি বৃত্তি লাভ করেন।

প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তিনি সন্দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজী বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাশ করেন। মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৬৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

এরপর একজন ব্যাংকার হিসেবে তিনি ১৯৬৫ সালে তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংকে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যা জনতা ব্যাংকরূপে আত্নপ্রকাশ করে। ১৯৮৩ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ব্যাংকিং কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতায় ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কমার্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড(বিসিআই) প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক নামে আত্মপ্রকাশ করেছে। এছাড়া ও তিনি রূপালী ইন্স্যুরেন্স এর প্রতিষ্ঠাতা এবং স্পেশাল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন:  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৫৮ সদস্য সমন্বয়ক টিম গঠন

এছাড়া তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে তিনি ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সসহ বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।

পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি বহু-সামাজিক সাংষ্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দৈনিক রুপালী, সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ, সাপ্তাহিক স্বদেশ খবর, ব্যাংকার, প্রিয় খেলা, চোখে চোখে, গোলাপী, দি উইকলি বাংলাদেশ, নিউজ উইকসহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ছিলেন এগুলোর সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সন্দ্বীপে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন অসংখ্য স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, সাইক্লোন সেন্টার ও একটি কলেজ। তিনি নিয়মিতভাবে কয়েক বছর সন্দ্বীপে চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে গরীব অসহায় ৩২৮ জন রোগীর চোখের দৃষ্টি দান এবং প্রায় ২০ হাজার রোগীর চিকিৎসা করান। অন্ধত্ব মোচনের সাথে সাথে বিনামূল্যে চশমাও বিতরন করেন। চক্ষু শিবির নামে এই কর্মসূচিটি তার জীবদ্দশায় অনেকবার পরিচালিত হয়েছিল।

আরও পড়ুন:  সাবেক এমপি মমতাজ গ্রেপ্তার

অত্যন্ত দানশীল ও পরোপকারী এই মানুষটি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পরম ভালবাসায় জনগণের পাশে থেকে আমৃত্যু একজন দরদী নেতা হিসেবে সেবা করে গেছেন।

সাবেক এমপি মুস্তাফিজুর রহমানের কারণে সন্দ্বীপ এখন গোটা বিশ্বে একটি সুপরিচিত দ্বীপ। সন্দ্বীপের সর্বত্রই দ্বীপবন্ধুর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আছে। বহু স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দিরসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে মুস্তাফিজুর রহমানের অবদান আছে।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কর্মময় স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৮টায় দ্বীপবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেল ৩ টায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *