৭ অক্টোবর বছরের প্রথম সুপারমুন, দেখা যাবে বাংলাদেশেও

চাঁদপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর—২০২৫ সালের প্রথম সুপারমুন দেখা যাবে আগামী ৭ অক্টোবর। এ সময় চাঁদ তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসবে। ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় চাঁদকে বড় এবং উজ্জ্বল দেখা যাবে। জ্যোতির্বিদদের ভাষায়, এই সময়ের সুপারমুনকে বলা হয় ‘হার্ভেস্ট মুন’, যা প্রতি বছর শরৎ ঋতুর শুরুতে দেখা যায়।

চলতি বছর পরপর তিনটি সুপারমুন দেখার সুযোগ মিলবে। এর প্রথমটি হচ্ছে এই অক্টোবরের হার্ভেস্ট মুন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের হার্ভেস্ট মুন শারদ বিষুবের (Autumnal Equinox) কাছাকাছি সময়ে ঘটবে। বিষুবের সময় সূর্য পৃথিবীর নিরক্ষরেখার ওপর দিয়ে অতিক্রম করে বলে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান থাকে। এই সময় উদিত পূর্ণিমার চাঁদকে সাধারণের তুলনায় বড়, সোনালি-কমলা রঙের এবং অধিক উজ্জ্বল মনে হয়, বিশেষ করে যখন এটি দিগন্তের কাছাকাছি অবস্থান করে।

আরও পড়ুন:  জামিন পেলেন ঢাবি শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জন

সাধারণত পূর্ণিমার চাঁদ রাতভর ওঠে না, তবে হার্ভেস্ট মুনের সময় চাঁদ স্বাভাবিকের তুলনায় তাড়াতাড়ি ওঠে এবং একাধিক রাত ধরে আকাশে বড় আকৃতিতে দৃশ্যমান থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এটি অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

‘হার্ভেস্ট মুন’ নামটির পেছনে রয়েছে ইতিহাস ও কৃষির সঙ্গে জড়িত একটি প্রেক্ষাপট। প্রাচীনকালে, যখন বিদ্যুৎ ছিল না, তখন কৃষকেরা ফসল কাটার মৌসুমে সন্ধ্যার পরও চাঁদের আলোয় কাজ করতেন। এই সময় উজ্জ্বল চাঁদের আলো তাঁদের বাড়তি সময় মাঠে কাজ করার সুযোগ দিত। তাই একে ‘হার্ভেস্ট মুন’ বলা হয়।

পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (সুপারকো) অনুসারে, বছরের প্রথম সুপারমুন ৭ অক্টোবর পাকিস্তানসহ সারা বিশ্বে দৃশ্যমান হবে। যখন চাঁদ তার পেরিজিতে পৌঁছাবে- পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের কক্ষপথে- তখন এটি স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে, যা এটিকে সুপারমুন হিসাবে পরিচিত।

আরও পড়ুন:  বিজেপি জোটের নীতীশ-নাইডুর সঙ্গে যোগাযোগ করছে কংগ্রেস

সুপারকো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবরের সুপারমুন গড় পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল দেখাবে। সেই রাতে, চাঁদ পৃথিবী থেকে প্রায় ২,২৪,৫৯৯ মাইল (৩৬১,৪০০ কিলোমিটার) দূরে থাকবে।

জ্যোতির্বিদদের ধারণা, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে ৬ ও ৭ অক্টোবর দুই রাতেই এই সুপারমুন দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে চাঁদ যখন দিগন্তরেখার কাছাকাছি থাকবে, তখন সেটি আরও বড় এবং গাঢ় সোনালি-কমলা রঙের দেখাবে।

সুপারমুন দেখার জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। খোলা আকাশে দিগন্ত বরাবর তাকালেই এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। তবে আলোদূষণবিহীন পরিবেশে এটি সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা সম্ভব।

এটি ১১ মাসের মধ্যে প্রথম সুপারমুন হবে, শেষটি ২০২৪ সালের নভেম্বরে দেখা গিয়েছিল।

আরও পড়ুন:  বিজয় গাথা-নীলাঞ্জন বিদ্যুৎ

এর পর চলতি বছর আগামী ৫ নভেম্বর এবং ৫ ডিসেম্বর সুপারমুন দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চতুর্থটি ২০২৬ সালের জানুয়ারির শুরুতে ঘটবে, যদিও এটি ২০২৫ সালের সুপারমুন চক্রের অংশ হিসেবে গণনা করা হবে না।

সূত্র: জিও টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *