একজন ক্যারিশমেটিক তরুণ কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক 

ইলিয়াস কামাল বাবু/নীলাঞ্জন বিদ্যুৎ
আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ বলেছেন বঙ্গদেশ নদীমাতিৃক এবং একই সঙ্গে দ্বীপমাতিৃক। ক্ষুদ্র, মাঝারী, বৃহৎ দ্বীপের  সমষ্টি এই বঙ্গদেশ। সন্দ্বীপ তার মধ্যে উজ্জ্বলতম দ্বীপ। যার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য। তেমনি এ দ্বীপের এক উজ্জ্বতম তরুণ কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক। বিশ্বজনীন বাঙ্গালি কবি বেলাল মোহাম্মদ যাঁকে অভিহিত করেছেন “শ্রীমান কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক”।
তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের কারণে সর্বমহলে তারকা খ্যাতি অর্জিত হয়েছে। তার লেখনি ও স্বপ্নের মেলবন্ধনে সমাজ, মানবিকতা ও দেশপ্রেমের ছাপচিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কলমে উঠে এসেছে স্বপ্নবান তরুণ প্রজন্মের কথা ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মানের সুগভীর আকাঙ্কা।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় যোগাযোগ বিছিন্ন দ্বীপটির অতীত-ঐতিহ্য,সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কথা জাতীয় পর্যায়ে যথার্থ উপস্থাপনের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর তারুণ্যের অনন্য সৃজনশীল ভাবনা নিয়ে সৃষ্টি সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশন। ভালো বন্ধুর খোঁজে… শ্লোগানকে ধারণ করে সমাজকে দেখা এবং নতুন সমাজ বিনির্মানের স্বপ্ন তৈরি করা।জনগণের মধ্যে সেই মহৎ আকাঙ্কা সৃষ্টি করা। প্রত্যক্ষ উপকার ভোগী হচ্ছেন তরুণ সম্প্রদায় এবং পরোক্ষভাবে সমগ্র সমাজ যারা আগামী দিনের একটি নূতন পৃথিবীর অভ্যুদয় ঘটাতে যাচ্ছে। জনমনে সৃষ্টিশীল কর্মপ্রেরনা সৃষ্টি করতে তিনি সফল হয়েছেন।তিনি বিশ্বাস করেন সাম্য, মৈত্রী এবং আত্মার স্বাধীনতা ছাড়া মানুষের মুক্তির উপায় নেই। ফরাসী বিপ্লবে অভূতপূর্ব আহবান “ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার” এমন মহৎ এবং তুলনা রহিত আদর্শকে মুখ্য বিবেচনায় রেখে নিস্ততরঙ্গ জনসমাজে সৃষ্টিশীলতার তরঙ্গ সৃষ্টি করেছেন।যার কারণে সংগঠনটি দিনের পর দিন পত্র-পল্লবে বিকশিত হবে।
আলোকিত মানুষদের কৃতিত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন এই তরুণ। তাঁর প্রভাবশালী নেতৃত্ব ও তুখর বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে আলোচনার ঝড়। তাঁর কর্ম ও সাফল্য, এই দু’য়ে মিলে সৃষ্টি হয়েছে বহু অনুসারি। অত্যন্ত মেধাবী ও বহুমূখী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন স্কুলবেলা থেকেই। লেখালেখির শুরুটা ছিলো শৈশব থেকেই। মাধ্যমিক পর্যায়ে ম্যাগাজিন সম্পাদনাও করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোকিত অঙ্গনে সাংস্কৃতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৪ সালে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ইয়ূথ কনভেনশনে তাঁর বক্তব্যে মুগ্ধ হয়েছেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর মতে “ এই ছেলে, এই ছেলেরাই একদিন আলো ছড়াবে”।
অল্প বয়সে তার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিভা দেখে বিশ্বজনীন বাঙালি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও শব্দ সৈনিক কবি বেলাল মোহাম্মদ তাঁর জীবতদশায় লিখে গেছেন-“ প্রসঙ্গত, মূল ভূখন্ড থেকে বিছিন্ন দ্বীপবাসী হিসেবে পর্যাপ্ত উপকরণ ও পৃষ্ঠপোষকতার  অভাবে আমাদের যৌবনকালের যেসব স্বপ্নসাধ অপূর্ণ থেকে গেছে, কাজী ইফতেখারুল আলম তারেকের মতো তরুণদের হাতে তার পূর্নতা লাভ করছে। এই টুকুন জীবদ্দশায় দেখে যেতে পেরে আমি অত্যন্ত আমোদিত (সূত্র:উত্তর ফাল্গুনী, লিটল ম্যাগাজিন, প্রকাশ ২০১০)।
আশৈশব সংস্কৃতিমনা এই তরুণ জীবনের বাঁকে বাঁকে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন আপন আলোয় থেকে। তিনি দেশবরেণ্য খ্যাতিমান শ্রমিকনেতা কাজী সাঈদের পৌত্র। পারিবারিক সমৃদ্ধ আবহ তাঁকে পরিস্রুত করেছে একটি মানবিক, সার্বজনীন, পরমতসহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ রাষ্ট্র বিনির্মানের উজ্জ্বল প্রত্যয়ে। এই তরুণ সবার কাছে প্রিয় হওয়ার প্রথাগত ও সংকীর্ণ মতাদর্শে বিশ্বাসী নন। শোষক এবং শোষিতের  দ্বন্দ্বে সমাজ রাষ্ট্রে তিনি আশৈশব শোষিতের পক্ষে। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের অবাধ্য প্রতিপক্ষ তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে তিনি সম্পূর্ণ আপোষহীন। কুৎসিত সুবিধাবাদ তাঁর নিকট চরম ঘৃণ্য। সংগত কারণে তিনি সবার প্রিয় হতে চান না। তিনি জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে জীবিকা নিশ্চিত করণের মতো দুসাধ্য কর্মে আনন্দ পান।
এদেশের বহু বিদগ্ধজনের সান্নিধ্য তাঁর মেধাকে শাণিত থেকে শাণিততর করেছে। “তরুণ প্রজন্মের আশংকা ও হতাশার মধ্য থেকে তিনি তরুণ প্রজন্মকে সুন্দর আগামীর দিকে ধাবমান হওয়ার জন্যে প্রণোদনা দিচ্ছেন। মহাকালের আমৌঘ বাণী “ উঠো,জাগো এবং শ্রেয়কে বরণ করো” ছড়িয়ে দিতে চান প্রতিটি আলোক সন্ধানী মানুষের হৃদয়ে। এখানে তিনি অনেকের কাছে জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বস্ত। তাঁর প্রতিভা ও কর্ম নিঃসন্দেহে তাকে আলোকিত করেছে, তাঁর বিচ্ছিরিত আলোক শিখাই সমাজ একদিন আলোকিত হবে। তাঁর সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য স্বপ্নবান সাহসী মানুষ। নিজের সৃষ্ট সংগঠন ছাড়াও তিনি অসংখ্য সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।
দেশের প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া গণমাধ্যমে তার লেখা নিয়মিত ছাপা হচ্ছে। “প্রজন্মের কথা বলি” কলামে দীর্ঘদিন ধরে পাঠক মহলে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন এই তরুণ। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন সর্বমহলে। এর মধ্যে রয়েছে সন্দ্বীপের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য নির্মাণ করেছেন ৮ পর্বের ডকুমেন্টারি। এছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপরে একটি গানের তথ্য চিত্র নির্মাণ করেছেন যা চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত হয়েছে। তিনি সাংবাদিকতায় দেশে- বিদেশে বেশি সেমিনারে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘের ৭৮তম সম্মেলন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ কাভার করেন। এছাড়া তিনি ভারত, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আমেরিকা, কানাডা পেশাগত এবং শিখা সফর হিসেবে ভ্রমণ করেন। তিনি দেশে বিদেশে বহু বরেণ্য মানুষের দ্বারা সম্মানিত হয়েছেন।
সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশনের মধ্য দিয়ে গত এক যুগ ধরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সভা সেমিনারসহ শতাধিক প্রোগ্রাম করে দ্বীপজেলা সন্দ্বীপে সৃজনশীলতার ঐতিহ্য সৃষ্টি হয়েছে। সদা হাস্যজ্জল এই আইকন তাঁর উজ্জ্বল পূর্বসূরী কমরেড মুজাফফর আহমেদ, বিপ্লবী লালমোহন সেনদের মতো তাঁর ঠিকানা হবে গণমানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *