হেলিকপ্টারের দড়িতে ঝুলে প্রাণে বাঁচলেন নেপালের মন্ত্রীরা (ভিডিও)

নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক মন্ত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বাসভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে। একাধিক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তেজিত জনতা রাস্তায় মন্ত্রীদের ধাওয়া করে মারধর করছে।

মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সহিংসতার সময় বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেক মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে রেসকিউ স্লিং (দড়ি) নামিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা দড়ি আঁকড়ে ধরে হেলিকপ্টারে ওঠার চেষ্টা করছেন। উদ্ধার শেষে তাদের কাঠমান্ডুর একটি হোটেলের ছাদে নামিয়ে দেওয়া হয়। এই সময় আকাশে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন:  কাকরাইলে গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

ঘটনার সূত্রপাত হয় নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারির পর। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তরুণরা বিক্ষোভে নামে। দ্রুত তা সহিংসতায় রূপ নেয়। মঙ্গলবার রাজধানীজুড়ে সরকারি-বেসরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। এর মধ্যেই পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনী রাজধানীতে টহল শুরু করেছে এবং জনগণকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের প্রধান টার্গেটে ছিলেন শীর্ষ সরকারি নেতারা। তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেল ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাড়িতেও হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা।

আরও পড়ুন:  নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কার্কি

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলকে রাস্তায় ধাওয়া দিয়ে মারধর করছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আরেকটি ভিডিওতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা ও তার স্বামী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেসের প্রধান শের বাহাদুর দেউবাকে মারধরের দৃশ্য ধরা পড়ে। ভিডিওতে রক্তাক্ত অবস্থায় শের বাহাদুর দেউবাকে একটি মাঠে অসহায়ভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে।

বর্তমানে নেপাল সেনাবাহিনী পুরো রাজধানীজুড়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সহিংসতা দমনে সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত আছে। দেশজুড়ে চলমান এই বিশৃঙ্খলায় পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে দেশটির জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। উল্লেখ্য, এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুচিলা কার্কির নাম আলোচনায় রয়েছে। সূত্র : এনডিটিভি।

আরও পড়ুন:  এইচএসসির ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা একই দিনে হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *