২৯ বছরেও কিনারা হয়নি সালমান শাহর মৃত্যু রহস্যের

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক  সালমান শাহর (চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন) মৃত্যুর ২৯ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ৬ সেপ্টেম্বর। ২৯ বছর ধরেই তাঁর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে থানা পুলিশ, সিআইডি, ডিবি, র‌্যাব ও সর্বশেষ পুলিশের বিশেষ তদন্ত বিভাগ পিবিআই। বিচার বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে। এর পরও কোনো সংস্থাই রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।

সর্বশেষ পিবিআই সাড়ে তিন বছর তদন্ত শেষে চার বছর আগে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতেও শেষ হয়নি মামলাটি। পুনঃ তদন্তের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সালমান শাহর পরিবার।  তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করা হয়েছে।

রিভিশন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত। গত ২৬ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেনের আদালতে রিভিশন পিটিশনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী এদিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় শুনানি পিছিয়ে নতুন তারিখ দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন:  ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে রোডম্যাপ দাবি সালাহউদ্দিনের
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন  সঠিক হয়নি মর্মে আমরা আদালতে দাবি করেছি।

’ তিনি আরো বলেন, ‘রিভিশন আবেদনকারী হলেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইংল্যান্ডে রয়েছেন। তিনি অসুস্থও। তাঁর ভাই আলমগীর কুমকুমকে রিভিশনকারী হিসেবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছেন।’

এদিকে সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে তাঁর কিছু ভক্ত ব্যানার নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে গত ২৬ আগস্ট মানববন্ধন করেন।

সালমান শাহর ভক্ত শাহীন হাসান গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁর হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে হবে। গত ২৬ আগস্ট রিভিশনের শুনানি হয়নি। ২৩ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য আছে। সেদিনও আমরা সালমান ভক্তরা আদালতে যাব।’ তিনি আরো বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সালমানকে ভালোবাসি। তাঁকে কোনো দিন ভুলতে পারব না। আমরা দেখতে চাই কারা হত্যা করল বাংলাদেশের এত বড় একজন নায়ককে।’প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার ১১/বি নম্বর ফ্ল্যাটে নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহকে পাওয়া যায়। তখন প্রথমে হলি ফ্যামিলি এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। ওই মামলা প্রথমে রমনা থানা পুলিশ ও পরে ডিবি তদন্ত করে।

আরও পড়ুন:  জুলাই আন্দোলনের ছবি-ভিডিও চেয়েছে পুলিশ

তদন্তকালে সালমান শাহর লাশের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথম ময়নাতদন্তে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। এতে পরিবার আপত্তি জানালে লাশ কবর থেকে তুলে সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু লাশ পচে যাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা অপমৃত্যু বলেই প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর বাদী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে নারাজি দিলে ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার মজিবুর রহমান তদন্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *