বাজার থেকে আরও ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিলাম ডেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আরও আট কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ  ব্যাংক। এ নিয়ে সম্প্রতি  পাঁচ দিনের নিলামে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছে ৬২ কোটি ২০ লাখ ডলার। ডলার কেনার বিপরীতে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা বাজারে ঢুকেছে। যাদের কাছে উদ্বৃত্ত ডলার রয়েছে, তারা নিলামে অংশ নিচ্ছে। ডলারের দর যাতে বেশি না কমে, তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার কিনছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকালের নিলামে ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স চাঙ্গা থাকায়  ব্যাংকগুলোর কাছে ডলারের সরবরাহ সাম্প্রতিক সময়ে বেশ বেড়েছে। এর প্রভাবে ডলারের দর দ্রুত কমে যাচ্ছিল। এক মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারে তিন টাকা ৪৫ পয়সা কমে আন্তঃব্যাংকে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে যায়। ডলারের অস্বাভাবিক পতন হলে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমার শঙ্কায় সাম্প্রতিক সময়ে নিলামের মাধ্যমে প্রথম গত ১৩ জুলাই ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিন ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনে দুই হাজার ৭৮ টাকা বাজারে ছাড়া হয়।

আরও পড়ুন:  ঈদের আগে ছুটির তিনদিন খোলা থাকবে ব্যাংক

ডলার কেনার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উন্নতি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে টাকার তারল্য বাড়ছে। এর ফলে  ট্রেজারি বিল ও  বন্ডের সুদহার দ্রুত কমছে, যা গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার কমাতে সহায়ক হবে।
গত সরকারের সময় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাড়ছে। গতকাল বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।  বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে উঠেছিল। সেখান থেকে কমতে কমতে আওয়ামী লীগ পতনের সময় ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়নে নেমে যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থ পাচারে কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে গত অর্থবছর প্রায় সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। আবার গত জুনের শেষ সপ্তাহে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি ঋণ যোগ হয়েছে। রপ্তানিতেও ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি রয়েছে। অথচ আমদানি বেড়েছে মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশের মতো। এসব কারণে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ভারসাম্যে চার বছর পর উদ্বৃত্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনে ১২ শতাংশ বা তার ওপরে ওঠা ট্রেজারি বিল ও  বন্ডের সুদহার দ্রুত কমে ১০ শতাংশের ঘরে নেমেছে। আগস্টে ৯১ দিন মেয়াদি বিলের সুদহার নেমেছে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত জুনে যা ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ ছিল। দুই বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার গত জুনের ১২ দশমিক ২০ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *