রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ চলছে। স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৫টায় এ ফোনালাপ শুরু হয় বলে ক্রেমলিন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস।

এর আগে, তাসের বরাত দিয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার সন্ধ্যায়, মস্কো সময় বিকাল ৫টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) টেলিফোনে কথা বলবেন বলে নিশ্চিত করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।

সোমবার মস্কোয় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পেসকভ বলেন, এই ফোনালাপের মূল উদ্দেশ্য হলো গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা।

তিনি বলেন, ‘ইস্তাম্বুলে আলোচনার বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের মূল অবস্থান স্পষ্ট করেছি। ফোনালাপের পর আমরা সবাইকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিবৃতি দিতে পারব’।

আরও পড়ুন:  অবশেষে মায়ের কাছে নাভালনির লাশ

পেসকভ এই ফোনাআলাপকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করেন। জানান, দুই দেশের ভবিষ্যত যোগাযোগ ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও এই ফোনালাপে আলোচনা হবে।

এ সময় তিনি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর—যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ মে মাসের ছুটিতে রাশিয়া সফর করবেন—সেই খবরের কোনো সত্যতা নেই বলেও জানান।

ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেন, ‘এ তথ্যটি সঠিক নয়’।

পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে সর্বশেষ ফোনালাপ হয়েছিল গত ১৮ মার্চ। এ সময়, দুই নেতার সম্ভাব্য সরাসরি সাক্ষাৎ কবে হতে পারে—এমন প্রশ্নে পেসকভ বলেন, ‘এটি নির্ভর করবে তাদের সময়সূচি ও পারস্পরিক সম্মতির ওপর। দুই প্রেসিডেন্টই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন’।

তিনি আরও বলেন, ‘আর সাক্ষাৎ করে তা ফলপ্রসূ হতে হবে, তাই সেটা ভালোভাবে প্রস্তুত করেই আয়োজন করতে হবে’।

আরও পড়ুন:  মার্কিন ‘গ্রিন কার্ড’ ও ট্রাম্পের ‘গোল্ড কার্ড’ এর মধ্যে পার্থক্য কী?

প্রসঙ্গত, সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে, তিনি যত দ্রুত সম্ভব পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান। হোয়াইট হাউসও জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠক ‘খুব শিগগিরই’ অনুষ্ঠিত হবে।

পেসকভ বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে মার্কিন মধ্যস্থতা যদি বাস্তব শান্তি অর্জনে সহায়ক হয়, তাহলে রাশিয়া তা মূল্যায়ন করে।

তিনি এ সময় মনে করিয়ে দেন যে, ২০২২ সালের আগেই রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ন্যাটো, ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (OSCE) এবং অন্যান্য পক্ষ রাশিয়ার প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে প্রত্যাখ্যান করে।

পেসকভ বলেন, ‘যখন কূটনৈতিক পথে আর কোনো গতি থাকে না, তখনই বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হয়’।

আরও পড়ুন:  উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম রেল যোগাযোগ

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়া প্রস্তাব দিয়েছিল যাতে নেটো, OSCE ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি হয়—যেখানে স্পষ্টভাবে বলা থাকবে, ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু পশ্চিমা শক্তিগুলো এমন কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *