সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড গেছেন লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে সাবেক রাষ্ট্রপতির ব্যবহৃত পাসপোর্টের নম্বর ডি-০০০১০০১৫। সাধারণত লাল পাসপোর্টের নম্বর কোড ডি। ডি’তে ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট বুঝানো হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নীল পাসপোর্টের নম্বরের কোড থাকে ওসি। সাধারণের জন্য ব্যবহৃত পাসপোর্টের কোড নম্বর হল এ।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) তথ্য অনুযায়ি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ লাল পাসপোর্ট বহন করছেন। তার পাসপোর্টটি বন্ধ করার বিষয়ে মন্ত্রনালয় বা আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বহিরাগমন শাখা-১ থেকে জারি করা পরিপত্র অনুযায়ি চতুর্থ ব্যক্তি হিসাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি ( অবসর জীবন যাপন ও পেনশনভোগী) লাল পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, গত বছরের ২১ আগষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ লাল পাসপোর্ট বাতিল ঘোষণা করে। ঘোষণার পর বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর লাল পাসপোর্ট লক (বন্ধ) করে দেয়। তবে রাষ্ট্রপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং ক‚টনীতিকদের লাল পাসপোর্ট বন্ধ করা হয়নি। ওই ঘোষণার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ ৯৭ জনের লাল পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশের বিশেষ শাখা ও দুদক থেকে বেশ কয়েকজন লাল পাসপোর্টধারী ব্যক্তির পাসপোর্ট বন্ধ করার নির্দেশনা আসে ডিআইপিতে।
গতকাল ডিআইপি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা এলেই তারা পাসপোর্ট লক করে দেন। কারো ক্ষেত্রে বাতিলও করা হচ্ছে। তবে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পাসপোর্ট বন্ধ করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
অন্যদিকে, বুধবার রাত ৩ টার দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের থাইল্যান্ড চলে যাওয়ার পর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে একটি রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টের তথ্য গতকাল সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভাইরাল হওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ‘ টিজি-৩৪০ বিমানযোগে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ব্যাংককগামী যাত্রী মো: আবদুল হামিদ, পাসপোর্ট নম্বর-ডি০০০১০০১৫ (সাবেক রাষ্ট্রপতি) ভিআইপি টার্মিনালে আসলে টার্মিনাল ইনচার্জ ওসি ইমিগ্রেশন আলফা-১১ স্যারকে অবগত করেন। আলফা-১১ স্যার এনএসআই ও ডিজিএফআইকে অবগত করেন। এনএসআই এর সহকারী পরিচালক সানাউল্লাহ নূরী ও ডিজিএফআই এর জিএসও-০১, উইং কমান্ডার ফয়সাল অনাপত্তি প্রদান করেন। এনএসআই ও ডিজিএফআই থেকে প্রাপ্ত অনাপত্তি ওসি ইমিগ্রেশন আলফা-১১ স্যার এসএস ইমিগ্রেশন (অপারেশন), অ্যাডিশনাল ডিআইজি ইমিগ্রেশন ও ডিআইজি ইমিগ্রেশন স্যারকে অবগত করেন।
অ্যাডিশনাল ডিআইজি ইমিগ্রেশন স্যার এসবি চীফ স্যারের রেফারেন্সে ওসি ইমিগ্রেশন আলফা-১১ স্যারকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রদান করেন। ওসি ইমিগ্রেশন আলফা-১১ স্যার এসবির উপরে উল্লেখিত সিনিয়র স্যারদের নির্দেশে ও এনএসআই এবং ডিজিএফআই থেকে প্রাপ্ত অনাপত্তি সাপেক্ষে এবং ইমিগ্রেশন ফরট্র্যাক সিস্টেমে কোন বিরুপ মন্তব্য না থাকায় ভিআইপি টার্মিনালে কর্তব্যরত ইনচার্জকে ইমিগ্রেশন করার নির্দেশ প্রদান করেন। টার্মিনাল ইনচার্জ ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন। উল্লেখ্য উক্ত যাত্রীর সাথে তার পুত্র রিয়াদ আহমেদ, পাসপোর্ট নং- বি০০-৬৯৮৮০ ও তার শ্যালক ডা. এ এন এম নওশাদ খান, পাসপোর্ট নম্বর-এ০৭৯৫০৬৯১ গমন করেন।’