চীনের ওপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও বাড়ানো হলো। আজ বুধবার থেকে ৩৪ শতাংশ অতিরিক্তি শুল্ক কার্যকর হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ২ এপ্রিল। তবে নির্ধারিত এই হার কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই তা বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে এখন চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ১০৪ শতাংশ। খবর-বিবিসি

এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এখন নতুন সিদ্ধান্তের ফলে চীনা পণ্যে শুল্কহার আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর আরও ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার এক দিনের মাথায় গত চৌঠা এপ্রিল চীনও সমান হারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় তারা দেশটির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে

আরও পড়ুন:  তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৭, বিধ্বস্ত বাড়িঘর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন যে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করলে দেশটির ওপর আরও ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হবে। তার ভাষ্য, ‌‘আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও অনেক বেশি হারে শুল্কের মুখোমুখি হবে।’ এই প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, ‘চীনকে চাপ বা হুমকি দিয়ে কখনও লাভ হবে না।’

কিন্তু চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও সাফ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনও মেনে নেবে না। চীনের অবস্থান হলো-– শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত-পার্থক্যের সমাধান করা হোক। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে একপ্রকার উপেক্ষা করে চীন এখনও তার আগের অবস্থানেই অনড়।

আরও পড়ুন:  যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে ১৮ জনের মৃত্যু

বিবিসি’র চীনের সংবাদদাতা স্টিফেন ম্যাকডোনেল জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির মুখেও বেইজিং ‘অটল’ আছে। যুক্তরাষ্ট্র আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই বাড়তি শুল্ক আরোপ করলো বলেও মন্তব্য করেছে চীন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চীনা পণ্যের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক বসাতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চীন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই চাপের মুখেও তারা পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও নড়বে না।

তবে হোয়াইট হাউজ আরও জানিয়েছে, আগামী ২ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের তুলনামূলক সস্তা পণ্যের ওপরও আর কোনো শুল্কছাড় থাকবে না। বুধবার প্রকাশিত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের এক সংশোধনীতে এসব জানানো হয়। আগে চীন ও হংকং থেকে ৮০০ ডলারের কম মূল্যের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্তভাবে প্রবেশ করতে পারত।এই পণ্যগুলোর ওপর তাদের মূল্যের ৯০ শতাংশ হারে বা প্রতি আইটেম ৭৫ ডলার করে শুল্ক বরসে। আগামী ১ জুনের পর তা দেড়শ ডলারে বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:  যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে জনপ্রিয় দ্রুত বর্ধনশীল ফ্যাশন ফার্ম শিয়েন ও তেমু’র মতো প্রতিষ্ঠানের পণ্যে। এতে করে চীনা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল মার্কিন ভোক্তাদের খরচ বেড়ে যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *