এস কে সুরের লকারে মিলল দেড় লাখ ডলারসহ বিপুল সোনা

সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর চৌধুরীর ব্যক্তিগত তিনটি লকার খুলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনা পাওয়া গেছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৭ সদস্যের দল সুরের লকার ভেঙে টাকা ও সোনা উদ্ধার করে।

দুদক সূত্র জানায়, তিনটি লকার থেকে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো, এক কেজি সোনা এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে।
 
জানা যায়, দুদক পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল সকাল ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে যায়।

এরপর একটি মিটিং সম্পন্ন হয়। সন্ধ্যা হলেও নানা নাটকীয়তায় দুদক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকেই অবস্থান করছে। আট ঘণ্টা পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের ব্যক্তিগত লকার খুলতে পারেনি তারা।গত ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ধানমণ্ডির এস কে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক।

আরও পড়ুন:  প্রথম রমজানে জমজমাট বেইলি রোডের ইফতার বাজার
পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)।এরপর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলে। ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানায়।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।

এরপর ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আরেক চিঠিতে জানায়, এস কে সুর তিনটি লকার নম্বরে মূল্যবান সামগ্রী রেখেছেন। এর মধ্যে গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বরের এসডি-৪৪/৬১ এবং ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এসডি-৪৮/১২ নম্বরের নমিনি করেছেন স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীকে।
আর ২০১৭ সালের ১২ জুলাইয়ের এসডি-৪৭/৩৫ নম্বরে রাখা সামগ্রীর নমিনি করেছেন মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীকে।

আরও পড়ুন:  অভিনেত্রী সীমানা মারা গেছেন

সামগ্রীগুলোর ধরন চিঠিতে সম্পর্কে বলা হয়, সেগুলো কাপড়ে মোড়ানো গালাযুক্ত কৌটা বা প্যাকেট।

তবে ওই তিনটি লকারে কী রেখেছেন এস কে সুর, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়নি।

সূত্র জানায়, লকারে রাখা প্যাকেট ও কৌটা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা জানলেও, এর ভেতরে সামগ্রীর বিষয়ে জানে না।বাংলাদেশ ব্যাংকের এ চিঠির পর দুদক সেটি খুলে দেখার জন্য অনুমতি চায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, লকার খুলতে আদালতের অনুমতি লাগবে। পরে ২২ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন স্বাক্ষরিত আবেদন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে জমা দেওয়া হয়। পরদিন লকার খোলার অনুমতি দেন আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *