১০ দিন ধরে সচিব ছাড়াই স্বরাষ্ট্রের সুরক্ষা সেবা বিভাগ!

বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ছাড়াই কার্যক্রম চলা এবং ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের দুই বিভাগের দায়িত্ব পালন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৭ সালে বিভাগের বিভাজনের পর যে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল, সেটি এখনও প্রভাবিত করছে। পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়টি এ দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল এবং তা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

আন্তর্বর্তী সরকার যদি দুই বিভাগকে আবার এক করার উদ্যোগ নেয়, তাহলে তা দ্বন্দ্ব নিরসনে সহায়ক হতে পারে। ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নাম উভয় বিভাগের ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকা এবং তিনি সম্প্রতি সুরক্ষা সেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। দুই বিভাগের কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।

দুই বিভাগের এক হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মানেই যে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, সেটি পরিষ্কার। সুরক্ষা সেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মূলত ২০১৭ সালে সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই শুরু হয়েছিল, যখন অনেকেই এই বিভাগে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তারা সবাই জননিরাপত্তা বিভাগে থাকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পরে জোর করে তাঁদের বদলি করা হয়।

আরও পড়ুন:  খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে আবারও পরিবারের আবেদন
নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিদেশের মিশনে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার কারণে জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা বঞ্চিত বোধ করতে থাকেন। এর ফলে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পায়। সুরক্ষা সেবা বিভাগে বদলি হওয়া কর্মকর্তারা যখন বিদেশে যাওয়ার সুযোগের জন্য তদবির শুরু করেন এবং উচ্চ আদালতে গিয়ে নিজেদের পক্ষে রায় আদায় করেন, তখন পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।এদিকে, মন্ত্রণালয় থেকে দুই বিভাগের কর্মীদের জন্য সমান হারে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে, আবারও দুই বিভাগের এক হওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সেটি দ্বন্দ্ব নিরসনে সহায়তা করতে পারে। তবে, কিভাবে এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে, তা দেখার বিষয়। কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া থাকবে, এবং সঠিক সমন্বয়ের জন্য নেতৃত্বের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন:  স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে প্রত্যেক সদস্য প্রস্তুত রয়েছে : সেনাপ্রধান

সুরক্ষা সেবা বিভাগের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার বক্তব্যটি উল্লেখযোগ্য, কারণ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে এত গবেষণা ও পরিকল্পনা করে যে বিভাগ গঠন করা হয়েছে, সেটি পুনরায় এক করার ফলে কি কার্যক্রমের গতি বৃদ্ধি পাবে। দুই বিভাগের আলাদা প্রশাসনিক ও আইন বিভাগ থাকায় অনেক কর্মকর্তাকে যেভাবে পদায়ন করা হয়েছে, তার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটিও একটি গুরুতর উদ্বেগ।

অন্যদিকে, জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তার মন্তব্য প্রকাশ করছে যে, তিনি অবিভক্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছিলেন। বিভাজনের ফলে জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা বিদেশে গিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, যা তাদের জন্য একটি বঞ্চনা। তাঁদের দাবি, যদি দুই বিভাগ এক হয়ে যায়, তাহলে বৈষম্য দূর হবে এবং সমান সুযোগ সুবিধা পাবেন।

আরও পড়ুন:  ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা বিভাগে ভাগ করার পর, উভয় বিভাগের কার্যক্রম ও নীতিমালার মধ্যে একটি সুসংহত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগের অধীনে রয়েছে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কোস্ট গার্ড এবং তদন্ত সংস্থা, যখন সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে রয়েছে পাসপোর্ট, কারা, এবং ফায়ার সার্ভিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। তাই এই বিভাগের কার্যক্রম একত্রিত করা হলে সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করা অত্যাবশ্যক।

…….ডিডিজে নিউজ/এম এফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *