সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসে ছত্রভঙ্গ বিক্ষোভকারীরা

চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী মোড়ে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টায় দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন।

ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে নগরের বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল তল্লাশি চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়।

আজ বিকেল তিনটায় নগরের জামালখান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগে থেকে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। সেখানে জড়ো হননি শিক্ষার্থীরা। তারা নগরের চেরাগী পাহাড়ে মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। এর আগে জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের নেতৃত্বে মিছিল বের করে যুবলীগ। তারাও চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থান নেয়।

সেন্টার পয়েন্ট হাসপাতালের সামনে যুবলীগের নেতাকর্মীরা ব্র্যাক ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সাড়ে তিনটার দিকে যুবলীগের মিছিল থেকে কয়েকজন গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাত থেকে ফেস্টুন কেড়ে নিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় পুলিশ কয়েকজন আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ একজনকে বেধড়ক পিটিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলে নেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রিজন ভ্যানের সামনে ও পেছনে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে পুলিশ জড়ো হয়ে তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা পুনরায় নগরের মোমিন রোডের কদম মোবারক এতিমখানা মার্কেটের সামনে রাস্তার পাশে বসে বিক্ষোভ করতে থাকে।

আরও পড়ুন:  ৩২ নম্বরের বাড়ির দরজা-ইট খুলে নিয়ে গেল ছাত্র-জনতা

একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডে কোতোয়ালি থানা-পুলিশের এসআই মোশাররফ আহত হন। এরমধ্যে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে রাস্তার পাশে থাকা বাশ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা।

এদিকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নগরের কাজির দেউড়ি মোড়েও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী সমকালকে বলেন, শিক্ষার্থীদের হত্যা, গণগ্রেপ্তার ও তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলাম। এসময় যুবলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশ বিনা অপরাধে আমাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন:  বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) অতনু চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই পক্ষ মুখোমুখি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়েছি।’ নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *