রাখালজীবন।। আসাদ মান্নান

এ কেমন রক্তপাত শুরু হলো অখিল নিখিলে!
অদৃশ্য নেশার স্রোতে ভেসে ভেসে কোন আস্তাবলে
ডুবন্ত প্রেমের ঘোড়া ঠাঁই নেবে চরম আশায়?
অন্তরঙ্গ বাগানের আঙ্গিনায় ফুলের উৎসবে
হঠাৎ তোমাকে দেখে মনে হলো ফুলের চেয়েও
অধিক সুন্দর মুখ নিয়ে ফুটেছে জলের ফুল;
এ ফুল কোথায় রাখি! ডালা কোলো হারিয়ে ফেলেছি
বহু দিন আগে; জনান্তিকে নিজেকে নিজের প্রশ্ন–
উলঙ্গ অস্থির চিত্তে পথে নামা সাজে কি আমার?
তবুও তোমাকে ভাবি কালিদাস যেমন ভেবেছে;
যদিও বছর জুড়ে আর কোনো সাড়াশব্দ নেই,
অরণ্যে তাকিয়ে দেখি সবুজের পাহাড় জড়িয়ে
কী নিবিড় মগ্নতায় ডুবে আছো পাতার সংসারে!
২.
সহসা বৃষ্টির গন্ধে নড়ে ওঠে স্থবির কুয়াশা:
কুয়াশা জড়ানো চোখে পাড়ি দিয়ে ঘুমের উজান
কতটা অধরা থেকে সে- বালিকা স্বপ্নে ধরা দেয়,
চাঁদের পোশাক পরে গোলগাল ফুলের বাহারে
নিজেকে ময়ূরী সাজে যে বালিকা নিজেকে সাজায়!
বাইরে তখনও বৃষ্টি ; আমি চোখ বন্ধ করে দেখি
মনের কদম ডালে ঝুলে আছে ফুল নয় এক
বর্ষামুখো নীলাম্বরা ; যে জল মেঘের ঢেউ ভেঙে
নেমে আসে বুকের নদীতে, তার জন্য প্রকৃতির
চোখ জুড়ে অনিদ্রার খেয়া ঘাটে আমি বসে আছি
পাড়ি দিতে দীর্ঘ এক আগুনের নদী– ‘ভালোবাসা’ :
কেউ কি এমন নেই যে আমাকে অন্ধকার থেকে
সবুজ জ্যোৎস্নার চরে এনে দেবে রাখালজীবন!
লেখক পরিচিতি- কবি ও সাবেক সচিব। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *