লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোজাক্কিরের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোজাক্কির হেসেন খান মিশুর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় লেফটেন্যান্টকমান্ডার মোজাক্কির হেসেন খান মিশু ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সকালে ভিয়েতনামের একটি হাসপাতালের মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩২ বছর।

তিনি রাজধানীর ‘চেরী ব্লোসমস ইন্টরন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষ ড. সালেহা কাদেরের একমাত্র ছেলে সন্তান ছিলেন।

 ছবি- সপরিবারে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোজাক্কির হেসেন খান মিশু 

উল্লেখ্য, তিনি পাকস্থলীতে ক্যান্সারজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়মিত ক্যামোথেরাপি দেওয়া হয়েছিল নিজের অজান্তেই কখন ঘাতক ক্যান্সারের জীবাণু শরীরে বাসা বেঁধেছিল বুঝতেই পারেননি নৌবাহিনীর এই কর্মকর্তা। অথচ ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার একদিন আগেও দীর্ঘ সময় সামরিক বিমানে আকাশের বুকে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। আক্রান্তের ছয় মাস পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আরও পড়ুন:  অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি: ড. ইউনূস

বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে অপারেশনের পর ক্যান্সারের জীবাণু পুরোপুরি নির্মূল না হওয়ায় পাঠানো হয় ভিয়েতনামে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালে ৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

এক নজরে মোজাক্কির হোসেন খান মিশু কর্মজীবন-

মোজাক্কির হোসেন খান মিশু ২০০২ সালে ক্যাডেট অফিসার হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগ দেন। ২০০৪ সালে তিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেন ও কমিশন লাভ করেন। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোজাক্কির হোসেন খান মিশু নেত্রকোণা জেলা আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মতিউর রহমান খান ও মিরপুর চেরী ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. সালেহা কাদেরের একমাত্র পুত্র। তবে জন্ম থেকেই তিনি ঢাকা মিরপুর ১১তে বসবাস করেছেন। মিরপুর বাংলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি ও আদমজী ক্যান্টনম্যান্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন অফিসার হিসেবে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সামনে যুদ্ধ জাহাজে সামরিক মেরিটাইম হেলিকপ্টার ল্যান্ডকারী পাইলট এবং নৌবাহিনীর এক্সিজিকিউটিভ শাখার চৌকস অফিসার। তার কৌশল ও দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসায় নৌবাহিনীর প্রধান তাকে নৌ প্রধান প্রশংসা পদক প্রদান করেন।

আরও পড়ুন:  প্রবীর মিত্রের প্রথম জানাজা এফডিসিতে

ছবি-নৌবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ হেলিকপ্টার প্রশিক্ষক  মোজাক্কির

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ হেলিকপ্টার প্রশিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সফর করেছেন- চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, ইতালি, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা, মিয়ানমার, সুইজারল্যান্ড, ওমান, দুবাই, আরব-আমিরাতসহ অনেক রাষ্ট্রে।

এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ২০০৪ এ কমিশন লাভের সময় সেরা মিডশিপমেন হিসেবে সোর্ড অফ অনার এবং নৌপ্রধান স্বর্ণ পদক লাভ করেন। ব্যক্তিজীবনে এক সন্তান, স্ত্রী, বোন, বাবা-মাকে রেখে যান।

উল্লেখ্য, সন্তানকে হারানোর পর ড. সালেহা কাদের এই কৃতি ছেলের নামে নামে গড়ে তুলেছেন ‘মোজাক্কির হোসেন খান মিশু ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশন থেকে আর্ত-মানবতার সেবাই শিক্ষা,সামাজিক, সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *