ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছক্কা–বৃষ্টিতে ভেসে গেল যুক্তরাষ্ট্র

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বার্বাডোজে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দারুণ ছক্কা-বৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে রইল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ১২৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৫ বল হাতে রেখেই ১ উইকেট হারিয়ে এই লক্ষ্য পেরিয়ে যায়।

ওপেনার শাই হোপ ব্র্যান্ডন কিংয়ের পাঁজরের চোটের কারণে খেলতে সুযোগ পেয়ে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ৮টি ছক্কা মেরে যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের ওপর ঝড় তোলেন। নিকোলাস পুরানও ৩টি ছক্কা মেরে তাতে যোগ দেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক রভমান পাওয়েল টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন আন্দ্রিস গাউস, যিনি ১৬ বলের ক্যামিও ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। রস্টন চেজ ও আন্দ্রে রাসেল ৩টি করে উইকেট নেন, এবং কৃপণ বোলিংয়ের কারণে চেজ ম্যাচসেরা হন, ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচ করেন।

আরও পড়ুন:  শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ-স্নাতক পাবেন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান

এ জয়ের ফলে সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোরালো হলো, আর টানা দুই হারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২৯ রানের লক্ষ্যে প্রথম তিন ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৩ রান তোলে। এরপর থেকে তাদের রান তোলার গতি দ্রুত বেড়ে যায়। পাওয়ারপ্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৮ রান করে তারা। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পেসার শ্যাডলি ফন শ্যালকিকের একটি ওভার থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ রান তোলে, যেখানে শাই হোপ ১টি চার ও ১টি ছক্কা এবং জনসন চার্লস ১টি চার মারেন।

তবে পাওয়ারপ্লে শেষ হতে না হতেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সপ্তম ওভারের শেষ বলে হারমিত সিংকে তুলে মারতে গিয়ে চার্লস লং অনে মিলিন্দ কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। তিনি ১৪ বলে ২ চারে ১৫ রান করেন। এরপর তিন নম্বরে নিকোলাস পুরান ব্যাটিংয়ে নামেন।

আরও পড়ুন:  রাশিয়ার হামলায় নিহত ৫, অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন জেলেনস্কি

পুরানকে এক পাশে দর্শক বানিয়ে হোপ তাণ্ডব চালিয়ে যান। নবম ওভারের শেষ তিন বলে মিলিন্দ কুমারকে পিটিয়ে হোপ ছক্কার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্রুত জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে সৌরভ নেত্রাভালকারকে ছক্কা মেরে হোপ ম্যাচের সমাপ্তি টানেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০.৫ ওভারে ১ উইকেটে ১৩০ রান করে জয়লাভ করে। হোপ ৩৯ বলে ৮২ রান করে অপরাজিত থাকেন, তার ইনিংসে ছিল ৮টি ছক্কা ও ৪টি চার।

ইংল্যান্ডের কাছে হেরে সেমিফাইনালে ওঠার পথে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এই জয়ে তারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং একই সঙ্গে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে গ্রুপ ‘টু’ তে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ পয়েন্ট ও +০.৬২৫ নেট রানরেট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৫৫ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটে জয় পাওয়ার ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ পয়েন্ট ও +১.৮১৪ নেট রানরেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ইংল্যান্ডেরও পয়েন্ট ২, তবে তাদের নেট রানরেট +০.৪১২।

আরও পড়ুন:  ইন্টারপোলের তালিকায় আছেন যেসব বাংলাদেশি

ইংল্যান্ড আগামীকাল বার্বাডোজে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তাদের শেষ ম্যাচ খেলবে। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা পরশু সকালে অ্যান্টিগায় মুখোমুখি হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি এই ম্যাচে জেতে, তাহলে তারা সুপার এইটে তাদের স্থান নিশ্চিত করবে এবং নেট রানরেটের জটিলতায় ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা পড়ে যাবে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বড় জয় ছাড়া ইংল্যান্ডের কোনো বিকল্প নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *