যুদ্ধ, সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে বিশ্বের ১২ কোটি মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে। ক্রমবর্ধমান এ সংখ্যাকে ‘ভয়ানক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে বিশ্ব সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা রেকর্ড বেড়ে ১১ কোটি ৭৩ লাখে দাঁড়িয়েছে। বৈশ্বিক রাজনীতিতে পরিবর্তন না এলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটির হাইকমিশনার।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা, সুদান, মিয়ানমারের মতো জায়গার সংঘাত আরও বেশি মানুষকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। বাস্তুচ্যুত হওয়া এসব মানুষ হলেন ‘শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং সংঘাত, নিপীড়ন, ভিন্ন ভিন্ন ও ক্রমবর্ধমান জটিল ধরনের সহিংসতার কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া। এ সময় তিনি সংঘাতকে ‘বাস্তুচ্যুতির গভীর চালক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

আরও পড়ুন:  পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে শপথ নিলেন পার্লামেন্ট সদস্যরা

ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন জাপানের জনসংখ্যার সমান। সংঘাত এখনও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির একটি খুব বড় কারণ। গত বছরের শেষ নাগাদ ১১ কোটি ৭৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ নাগাদ সংখ্যাটি আরও বেড়েছে। আনুমানিক হিসাবে এখন বিশ্বের ১২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় বসবাস করছে। আর টানা ১২ বছর ধরে সংখ্যাটি বাড়ছে। নতুন ও পরিবর্তনশীল সংকটের সংমিশ্রণসহ দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে ২০১২ সালের তুলনায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।

বাস্তুচ্যুতকে প্রসারিত করার পেছনে যে সংঘাতগুলো দায়ী, এর মধ্যে সুদানের যুদ্ধ অন্যতম। অন্যান্য সংকটের তুলনায় এ সংঘাতের দিকে যদিও কম মনোযোগ দেওয়া হয়েছে, তবে গ্র্যান্ডি এটিকে সংঘাতগুলোর মধ্যে ‘সবচেয়ে বিপর্যয়কর একটি’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আরও পড়ুন:  শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন আজ

তিনি বলেন, এই সংঘাতে ৯০ লাখের বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। চাদ, মিসর, দক্ষিণ সুদানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন আরও ২০ লাখ মানুষ। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের স্থানান্তরকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি সংঘাতের দিকে ধাবিত করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। খবর বিবিসি ও এএফপির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *