ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভোগান্তি কমাতে চালু হয়েছে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা। কোরবানির পশু বেচাকেনায় নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি

বুধবার ডিএনসিসির নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ডিএনসিসির কোরবানির পশুর হাটে ক্যাশলেস ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত হবে। ডিএনসিসি পেপারলেস স্মার্ট ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ডিএনসিসিতে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে কাউকে অফিসে আসতে হয় না। সম্পূর্ণ অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারছে। ট্রেড লাইসেন্সও অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। অনলাইন সেবার পরিসর বাড়াতে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এতে জনগণের ভোগান্তি কমবে এবং সিটি কর্পোরেশনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে ডিএনসিসির কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি, নকল বা ছেঁড়া, ফাটা নোট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হবে। ছিনতাই, মলম পার্টির খপ্পর থেকে রক্ষা পাবে ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

আরও পড়ুন:  গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস: সাবেক ৩৫ মন্ত্রী, ৪৩ এমপি, ২৮ পুলিশ গ্রেপ্তার

তিনি আরো বলেন, হাটে ডিজিটাল বুথ স্থাপন করে অর্থ তাৎক্ষণিক ক্রেতার হিসাব থেকে বিক্রেতার হিসাবে পৌঁছে দেওয়া হবে। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের নগদ টাকা বহন করতে হবে না। হাটের বুথ থেকে ক্রেতারা ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এটিএম বুথ, পজ মেশিন ব্যবহার করে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, কিউআর কোডের মাধ্যমে নগদ অর্থ তুলে হাট থেকে কেনা গরুর মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। পাশাপাশি হাটের হাসিলও দিতে পারবেন এই পদ্ধতিতে। একই সুবিধা ব্যবহার করে বিক্রেতারা তাদের কোরবানির পশু বিক্রির অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন।

২০২২ সালে স্মার্ট ডিএনসিসির কোরবানির হাটে পাইলট কার্যক্রমে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। ২০২৩ সালে ৪৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

আরও পড়ুন:  ২৫ মন্ত্রণালয় ও ২ বিভাগের দায়িত্বে ড. ইউনূস

অনুষ্ঠানে মেয়র আতিক বলেন, এবার কোরবানির ঈদে ৬ ঘণ্টায় পশুর বর্জ্য অপসারণের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এজন্য ১০ হাজারের অধিক কর্মী কাজ করবে। ১০ লাখ ৪০ হাজার পলিব্যাগ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন, টুকরি, ফিনাইল দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলর ও ডিএনসিসির কর্মীরা মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবে। জনগণকে অনুরোধ করছি যত্রতত্র কোরবানির বর্জ্য ফেলবেন না। নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেবেন। গতবারের মতো জনগণের সহযোগিতা পেলে ৬ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করব।

ডিএনসিসি মেয়র আরো বলেন, গত বছর সবার চেষ্টায় উত্তর সিটি কর্পোরেশন ৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছিল। এবার আমাদের টার্গেট ৬ ঘণ্টার মধ্যেই বর্জ্য অপসরণ করা। ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছে ৩২টি ডাম্প ট্রাক ও ৮টি কম্প্যাক্টর ট্রাক। ৪০টি ট্রাক যুক্ত হওয়ায় এই বছর বর্জ্য অপসারণে আরো গতি বাড়বে।

আরও পড়ুন:  পদ্মা ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা ফেরত নেবে সরকার

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সায়েদুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মুতাসিম বিল্লাহ, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন, বাংলাদেশ ডেইলি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. ইমরান হোসেন, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *