খাদ্য মূল্যস্ফীতি ফের বাড়ল

বেড়েই চলছে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি। এ যেন লাগামহীন। মে মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ফের দুই অঙ্কের ঘর পেরিয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে ২০২৩ সালের মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। 

এর আগের চার মাস পর এপ্রিলে এ মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ পার হয়। সেই ধারাবাহিকতায় পরের মাসেও অব্যাহত ছিল। জাতীয়, গ্রাম ও শহর-সব স্থানেই খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। 

এছাড়া খাদ্য মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় বেড়েছে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতিও। মেতে এ হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ; আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে কিছুটা কমে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুন:  আইএমএফ: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি কমার পূর্বাভাস

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন যুগান্তরকে বলেন, আমরা সব সময় বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে থাকি। প্রাপ্ত তথ্য অনুমোদন সাপেক্ষে রিলিজ করা হয়। বিবিএস তথ্য নিয়ে লুকোচুরি করে না।

সূত্র জানায়, দুই বছর ধরে বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এ সময় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কোনো কাজে আসেনি। ফলে এটি নিয়ন্ত্রণ করাকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছে সরকার। তবে বেড়েছে শ্রমের মজুরিও। কিন্তু যে হারে মজুরি বাড়ছে, এর চেয়ে অনেক বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। এ কারণে বাড়তি আয় খেয়ে ফেলছে মূল্যস্ফীতি। সাধারণ, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

বিবিএস-এর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মেতে গ্রামেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের মেতে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া সার্বিক মূল্যস্ফীতি মেতে বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে খাদ্যবহিভর্‚ত মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ।

আরও পড়ুন:  আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক গোলাপ আটক

এদিকে মেতে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এছাড়া ২০২৩ সালের মেতে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। শহরে গত মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। খাদ্যবহিভর্‚ত মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ০৩ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ০১ শতাংশ।

বিবিএস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে মজুরি সূচক কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে কৃষি খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। শিল্প খাতে সামান্য কমে মে মাসে হয়েছে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তবে সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

আরও পড়ুন:  রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার

এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে মজুরি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ আর জাতীয়ভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ।

 

@dakdiyejai.news  @ডাকদিয়েযাই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *