ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সকাল থেকে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টির ফলে হাঁটু থেকে বুক পরিমাণ পানিতে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ এলাকা। এদিকে, পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গণপরিবহনের সংখ্যা একেবারেই কম। ফলে রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনে অর্ধভেজা হয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়া, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া চলমান থাকায় নগরের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, ডিসি রোড, নাসিরাবাদ, নগরীর তিনপুলের মাথা, মুরাদপুর, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, ২ নম্বর গেইট, মেহেদীবাগ, কে বি আমান আলী রোড, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, প্রবর্তক মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় হাঁটু পরিমাণ পানি জমেছে। কোনো কোনো জায়গায় কোমর পানিও জমেছে।

আরও পড়ুন:  ঢালিউড সুপারস্টারের জন্মদিন আজ

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল সড়কগুলো হাঁটু থেকে কোমর কিংবা অনেক স্থানে বুক সমান পানিতে ডুবে গেছে। সড়কের পাশের অধিকাংশ দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে। অনেক দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার সড়কে গণপরিবহন একেবারেই নেই। চকবাজার থেকে বহদ্দারহাট যেতে টেম্পু ভাড়া পাঁচ টাকা। অথচ এখন আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা। এছাড়া, রিকশাগুলোও তিনগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে।

হালিশহরের গ্রিনভিউর বাসিন্দা সানাউল্লাহ জানান, ‘বৃষ্টির পানিতে আমার বাসার নিচতলা ডুবে গেছে। বাসা পরিস্কার করতে এই বর্ষণমুখর দিনে লোকজন পাওয়া দুষ্কর। পানিতে তলিয়ে গেছে বাসার সব কটি কক্ষ। এতে আসবাবপত্র এবং খাট-সোফা নষ্ট হয়ে হওয়ার আশংকা করছি।

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতাকে দায়ি করেন এই বাসিন্দা। তিনি বলেন, সরকার সারাদেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন। অথচ এখানকার কমিশনার কিংবা চসিকের কর্মকর্তারা হালিশহরের ড্রেনগুলো পরিস্কার কেন করে না সেটা আমার বোধগম্য না। এমন দুর্যোগে জলাবদ্ধতা হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু প্রতি বর্ষায় এমন চিত্র হালিশহরবাসিকে দেখতে হয়।

আরও পড়ুন:  ঝড়-বৃষ্টি কমে বাড়তে পারে তাপমাত্রা

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিক প্রকল্পে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে আট হাজার কোটি টাকা। এত টাকা ব্যয় হলেও সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যাচ্ছে চট্টগ্রাম।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নগরবাসী। হালিশহরে সমাজকর্মী মুজিবুল মাওলা রনি বলেন, ‘আমাদের আশপাশের এলাকা ৪ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টির চট্টগ্রামের হালিশহরে পানিতেই রাস্তাঘাট ডুবে যায়। মানুষের বাসাতে পানি প্রবেশ করে। এত টাকা খরচের কোনো সুফল জনগণ পাচ্ছে না। ভোগান্তি দূর করতে আরও মনযোগী হতে হবে চসিককে। এছাড়া এখানকার খালগুলোকে আধুনিকায়ন এবং আবর্জনা মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।

অন্যদিকে, আগামীকাল মঙ্গলবারও ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। রোববার (২৬ মে) রাত ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত  চট্টগ্রামে ২৩৮.৪ মিলিলিটার বৃষ্টি হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন:  চা শ্রমিকদের জীবন চলে কীভাবে?

 

@dakdiyejai.news  @ডাকদিয়েযাই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *