মহান বিজয় দিবসে দেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন বিপুল পরিমাণ পর্যটক।
বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকেই মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে, পড়ন্ত সন্ধ্যায় কলাতলী, লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্টে সমাগম ছিলো চোখে পড়ার মতো।
বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে সার্ফিং ও জেটস্কি প্রদর্শনী দর্শণার্থীদের নজর কেড়েছে। এছাড়াও সন্ধ্যায় সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শুরু হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং উদ্বোধন করা হয়েছে তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা। রাতে উন্মুক্ত স্থানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে বিজয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে, বিপুল জনসমাগম হয়েছে। জনসাধারণ ও আগত পর্যটকদের বিজয় উদযাপন যেন নিরাপদ-নির্বিঘ্নে হয় সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কক্সবাজার ভ্রমণের পাশাপাশি বিজয়ের এই আনন্দ উদযাপন আগত পর্যটকদের মাঝে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। বরিশালের পিরোজপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মাসুমুল কবির। তিনি সহকর্মীদের সাথে নিয়ে এসেছেন বেড়াতে।
তিনি বলেন, দেশের মধ্যে ঘুরতে আসার সেরা স্থান হচ্ছে কক্সবাজার। অফিসের কলিগদের নিয়ে এসেছি, ভালো লাগছেই। আজকে বিজয় দিবস চারদিকে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ।
সৈকতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনে তৃপ্তি পেলেও ব্যবস্থাপনা ও অতিরিক্ত খরচ নিয়ে কিছু পর্যটকদের মাঝে অসন্তুষ্টি দেখা গেছে।
ঢাকার বাড্ডা থেকে আসা আরিফুজ্জামান বলেন, কক্সবাজারকে কেন ব্যয়বহুল শহর বলা হয় এখানে এসে বুঝলাম, রুমের ভাড়া থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বেশি। তার ওপর অটোভাড়া দিতে দিতে শেষ হয়ে যাচ্ছি। আর বিচে নানা রকম উৎপাত তো আছেই, এসব নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর হওয়া উচিত।
পর্যটন মৌসুমে ডিসেম্বরের শুরু দিকে পর্যটক কিছুটা কম থাকলেও মাসের মাঝ সময়ে এসে দিন দিন সে সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা খাত, ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আজকে কোথাও রুম খালি নাই বললেই চলে, ২৫ ডিসেম্বরও একই অবস্থা হবে। ছুটির দিনে চাপ বেশি থাকে, এই মৌসুমের শুরুতে কম আসলেও এখন ঠিকই বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসছেন।
হোটেল রুমের অতিরিক্ত ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমিতির আওতাধীন সকল হোটেলকে নির্দেশনা দেওয়া আছে যেন অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে বা অন্য কোনোভাবে পর্যটকদের হয়রানি করা না হয়। আমরা চাই কক্সবাজার আরও পর্যটকবান্ধব হয়ে উঠুক।
পর্যটক ভোগান্তি রোধের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়মিত তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।
তিনি বলেন, আমাদের ফার্স্ট প্রায়োরিটি হচ্ছে পর্যটকদের জন্য হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা আর সে লক্ষ্যেই আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ বা সহযোগিতা চাইলে আমরা দ্রুত সাড়া দিচ্ছি।
পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত হেল্পলাইন ০১৩২০১৬০০০০ নম্বরে যোগাযোগ করলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা পাওয়া যাবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।







