হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, আপাতত পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা চলছে

গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অপরিবর্তিত বলে জানিয়েছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। আজ সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলা বহুমুখী (মাল্টিডিসিপ্লিনারি) মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ওসমান হাদির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, এভারকেয়ার হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার সকালে মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে। সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোগীর সার্বিক অবস্থা, নিউরোলজিক্যাল ইনজুরি এবং বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে।

বৈঠকের পর মেডিকেল বোর্ড জানায়, রোগীর অবস্থা বর্তমানে স্ট্যাটিক, অর্থাৎ বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই মুহূর্তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে, নতুন কোনো সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ এখন করা হবে না।

আরও পড়ুন:  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া কারো অভিযান চালানোর অধিকার নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এছাড়াও এই বোর্ডে রয়েছেন হাসপাতালটির নিউরোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. আলীউজ্জামান জোয়ার্দার, এনেস্থেসিওলজি, পেইন ম্যানেজমেন্ট এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. লুৎফুল আজিজ, কার্ডিও থোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. জুলফিকার হায়দারসহ আরও একাধিক চিকিৎসক।

আরও পড়ুন:  ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ

এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।

হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে গতকাল রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়), অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেছিলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত। আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, আর এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না।

তিনি আরও বলেছিলেন, হাদি এখন ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় আছেন এবং আগামী ৭২ ঘণ্টা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে রাখা হয়েছে, যদিও চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *