সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দ্বীপাক্ষিক বৈঠক শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান মোদী।
মোদী বলেন, পুতিন শুধু ভারতের ঘনিষ্ঠ অংশীদারই নন, আমার প্রিয় বন্ধুও বটে।
মোদী স্মরণ করিয়ে দেন, চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার সময় দৃঢ়ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল রাশিয়া। মস্কো সে সময় বলেছিল, তারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের সঙ্গে ‘একমত ও সব ধরনের সন্ত্রাস নির্মূলে পাশে আছে। রাশিয়া পাকিস্তানে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুরের’ পক্ষেও জোরালো সমর্থন জানিয়েছিল।
দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে আয়োজিত এই যৌথ বিবৃতিতে বাণিজ্য, অর্থনীতি ও পণ্য পরিবহন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ঘোষণাও আসে। এছাড়া একটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়।
তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘোষণা আসে পুতিনের কাছ থেকে। ভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ’ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। যুক্তরাষ্ট্র যখন রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে দিল্লির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে, তখন পুতিনের এই মন্তব্য কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, দুই দেশের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, পণ্য পরিবহন ও কেমিক্যাল খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি বিনিময় করেন। মোদি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পুতিন জানান, দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যকে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বের ভ্রু কপালে তোলার মতো মন্তব্যও করেন তিনি। বলেন, ভারত ও রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক লেনদেনে জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এই বিষয়টি ডলারনির্ভর ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন।
পুতিন বলেন, যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা তিনি গভীরভাবে মূল্যায়ন করেন। দিল্লিতে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতের বৈঠকে এ বিষয়ে তাদের ‘খুব তথ্যসমৃদ্ধ ও কার্যকর’ আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যুদ্ধ শেষ করতে তার প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বিস্তারিত মোদীকে জানিয়েছেন এবং ভারত আবারও ‘শান্তির পক্ষে চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
শেষে মোদী তুলে ধরেন জ্বালানি খাতে দুই দেশের সহযোগিতার গুরুত্ব। তিনি জানান, এ সহযোগিতা শুধু বজায়ই থাকবে না, বরং গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ নতুন ক্ষেত্রেও তারা কাজ বাড়াবে।







