উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তেজগাঁওয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। 

ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

সভায় প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে বন্দী থাকা অবশিষ্ট ২৪ জনকে অচিরেই মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদকে অবহিত করেন। তিনি জানান, দুই-তিন দিনের মধ্যেই তারা দেশে ফিরবেন।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তার রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। আজ দুপুরে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিবের গণমাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন:  হেলাল হাফিজ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তার কালজয়ী কবিতার মতো: ড. ইউনূস

এর আগে, শুক্রবার বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি নিয়মিতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

একইসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যেন কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে সরকার প্রস্তুত।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের এ সময়ে বেগম খালেদা জিয়া জাতির জন্য ভীষণ রকম অনুপ্রেরণা। তার সুস্বাস্থ্য দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা ও সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

আরও পড়ুন:  ব্যারিস্টার সুমন গ্রেপ্তার, ছাত্র হত্যা মামলায় অভিযুক্ত

বেগম খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। এরপর করোনাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার। যদিও চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি।

গত বছরের ৫ আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসনকে।

আরও পড়ুন:  চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল

সবশেষ গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপাসনকে ভর্তি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *