ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ধাওয়া–পালটাধাওয়া ঘটনা সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আন্দোলনকারী ছাত্ররা উপস্থিত ছিল। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাসেল স্কয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাত নম্বর রোডের মুখে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে ছাত্র-জনতা অবস্থান নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে কলাবাগান এলাকা থেকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এর আগে সন্ধ্যা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল। রাসেল স্কয়ার এলাকার সামনে সেনাবাহিনী আগে থেকেই একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রেখেছিল।
রাত সাড়ে ৮টার পর আন্দোলনকারীরা সেই নিরাপত্তা বলয় অতিক্রম করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ পুনরায় ধাওয়া–পালটাধাওয়া শুরু করে। শুরুতে লাঠিচার্জ এবং পরপর চারটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা) এলাকাজুড়ে থেমে থেমে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং ধাওয়া–পালটাধাওয়া ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও পথচারী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যান চলাচল আংশিক স্বাভাবিক থাকলেও পুরো এলাকা প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে।
তিতুমীর কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবু নাঈম যুগান্তরকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাচ্ছিলাম। আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বাকি স্থাপনা মাটির সাথে ভেঙে দেওয়া। রাত আটটার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমরা লক্ষ্য পূরণ না করা পর্যন্ত মাঠ ছাড়ছি না। অনেক ভাই আহত হয়েছে। আমি নিজেও বিকাল চারটার দিকে পুলিশের লাঠিচার্জে হাতে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছে।
ঘটনার প্রভাবে শুক্রাবাদ, সোবহানবাগ, কলাবাগান, পান্থপথ ও রাসেল স্কয়ার–সংলগ্ন এলাকায়ও ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক দফায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল পর্যন্ত এলাকায় পুলিশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
রাত ১০টার দিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কলাবাগান, পান্থপথ, শুক্রাবাদ এবং ধানমন্ডি লেক এলাকার পাশে ছাত্ররা অবস্থান করছে। অন্যদিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রাসেল স্কয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত মোতায়েন থেকে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।







