শীতে অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার কারণ ও করণীয়

শীতকাল প্রায় চলে এসেছে। গ্রামাঞ্চলে ইতিমধ্যে শীত নেমে গেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রোগব্যাধির সংক্রমণ দেখা দেয়। আবার পুরনো কিছু রোগ জেগে ওঠে।

তেমনি একটি রোগ অ্যাজমা বা হাঁপানি। এই সময় এই রোগের রোগীদের জন্য বেশ কষ্টকর। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এই মৌসুমে তাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হয়।বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ অ্যাজমায় আক্রান্ত।

আর বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই রোগে ভোগেন। অনেকেই ইনহেলারের ওপর নির্ভর করেন, আবার কেউ কেউ ইনহেলার ছাড়াই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।শীতে অ্যাজমা বাড়ার কারণ

শীতকালে নিম্ন তাপমাত্রা, শুষ্ক বাতাস, ধুলা-বালু ও ধোঁয়া বাড়ে। পাশাপাশি কুয়াশা ও বদ্ধ পরিবেশ শ্বাসতন্ত্র সংকুচিত করে অ্যাজমার লক্ষণকে বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুন:  শেখ হাসিনার লন্ডন যাওয়ার গুঞ্জন,বাংলাদেশ নিয়ে বলল যুক্তরাজ্য
এ ছাড়া জেনেটিক কারণও গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মায়ের হাঁপানি থাকলে সন্তানেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এটি যেকোনো বয়সে দেখা দিলেও সাধারণত ৫ বছর বয়সের আগেই শুরু হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অ্যালার্জি বা সংক্রমণ বড় ভূমিকা রাখে।শীতে অ্যাজমার ঝুঁকি কমাতে করণীয়

  • বাইরে বের হওয়ার সময় নাক–মুখ স্কার্ফ বা মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখুন, যাতে বাতাস কিছুটা গরম ও আর্দ্র হয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে।
  • খুব ভোর ও গভীর রাতে তাপমাত্রা কম থাকে, তাই এই সময় বাইরে ব্যায়াম বা ঘোরাঘুরি এড়িয়ে চলুন।
  • শরীর গরম রাখতে উপযুক্ত শীতের পোশাক পরুন।
  • ঘরের জানালা–দরজা বন্ধ থাকলে ধুলা, ডাস্ট মাইট ও ছত্রাক জমে। তাই ঘরে পর্যাপ্ত আলো–বাতাস প্রবেশের সুযোগ রাখুন।
  • হিটার ব্যবহার করলে বাতাস যেন অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়, তা খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।
  • মশার কয়েলের ধোঁয়া, তামাক ও সিগারেটের ধোঁয়া সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন।
  • রিলিভার ইনহেলার সবসময় সঙ্গে রাখুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবহার করুন।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রক ওষুধ বা প্রিভেন্টিভ ইনহেলার গ্রহণ করুন।
  • ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা নিন, কারণ শীতকালে ভাইরাস সংক্রমণ অ্যাজমা আরো বাড়িয়ে দেয়।
  • সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন এবং অসুস্থ মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকুন।
  • শরীর হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত উষ্ণ পানি বা ক্যাফেইনমুক্ত গরম পানীয় পান করুন, এতে শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা পাতলা থাকে।
আরও পড়ুন:  রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, একদিনেই এসেছে ১০৯ মিলিয়ন ডলার

অতিরিক্ত সতর্কতা

ঘর পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। লেপ–তোশক, বালিশ, বিছানাপত্র রোদে শুকিয়ে নিন। দিনে কয়েকবার স্বাভাবিক বা হালকা গরম পানি পান করুন। এটি কফ পাতলা করে, ফলে কাশি ও শ্বাসকষ্ট কমে। সবচেয়ে জরুরি—চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *