সরকারের পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জানুয়ারিতে ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ শুরু না হওয়ার খবরে ভোলায় সফররত তিন উপদেষ্টাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

এ সময় তিন উপদেষ্টাকে ঘিরে নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। এক পর্যায়ে উপদেষ্টাদের বহন করা গাড়ির সামনে শুয়ে তাদের গাড়ি আটকে দেন বিক্ষুব্ধরা। 

আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

উপদেষ্টারা হলেন সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। কিছু সময় অবরুদ্ধ থাকার পর স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বিক্ষুব্ধ জনতাকে সরিয়ে নেয়।দীর্ঘদিন ধরে ভোলা-বরিশাল সেতুসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে আসছে ভোলাবাসী। এই দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকারের সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান একাধিকবার ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ শুরু হওয়ার কথা জানান।

আরও পড়ুন:  ১৫ জেলায় নতুন ডিসি
গত ৯ মে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. মহিউদ্দন ও সেতু সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ ভোলায় এসে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় আগামী জানুয়ারি মাসে সেতুর কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন।আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে তিন উপদেষ্টার অংশগ্রহণে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় জ্বালানি ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে স্থানীয়রা ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের সঠিক সময় ও অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান।

এ সময় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতুর বিষয়টি পূর্বের ডিজাইনে করা সম্ভব নয়। তাই নতুন করে ডিজাইন করা হচ্ছে।

এ ডিজাইনের কাজ আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে শেষ হলে এরপর কাজ শুরু হবে। তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা অগ্রগতির কথা জানাননি। এ কথার পর সভা শেষে উপস্থিত স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা উপদেষ্টাকে ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন। এর মধ্যেই উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার সময় তার গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন বিক্ষুব্ধ দুই যুবক এবং সেখানে থাকা বাকি লোকজন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির ও উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।প্রায় ২০ মিনিট ধরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির, উপদেষ্টা আদিলুর রহমান এবং উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন অবরুদ্ধ ছিলেন।

আরও পড়ুন:  লাইফ সাপোর্টে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
পরে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে জেলা সার্কিট হাউজের উদ্দেশে চলে যান।এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তরিকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এর আগে বারবার বলেছিলেন আগামী ডিসেম্বরে ভোলা-বরিশাল সেতুর দৃশ্যমান কাজ শুরু হবে। কিন্তু তিনি আজকের সভায় বললেন আরো ৬ মাস পর সেতুর কাজ শুরু হবে। তিনি কথা রাখেননি এবং তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাই আমরা তার অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছি। সঙ্গে উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাসনাইন পারেভজ জানান, ভোলা-বরিশাল সেতু ও ঘরে ঘরে গ্যাসের দাবিতে বিক্ষুব্ধ লোকজন উপদেষ্টাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। পরে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময়সূচি অনুযায়ী উপদেষ্টারা চলে গেছেন।

আরও পড়ুন:  নতুন চার উপদেষ্টার নাম জানা গেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *