ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্ক আরোপ অবৈধ : মার্কিন আদালত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্ক আরোপকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন দেশটির ফেডারেল আপিল আদালত। শুক্রবার ঘোষিত এক রায়ে আদালত বলেছেন, শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (আইইপিএ) আইনের অপব্যবহার করেছেন।

রায়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অবশ্য এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করতে পারবেন ট্রাম্প। ফেডারেল আপিল আদালত ট্রাম্পকে সেই সময় দিয়েছেন। শনিবারের রায়ে আপিল আদালত বলেছেন, আগামী ১৪ অক্টোবরের পর এই রায় কার্যকর হবে।

শুক্রবার রায় ঘোষণার শুনানিতে অংশ নিয়েছেন ফেডারেল আদালতের ১১ জন বিচারক। তাদের মধ্যে ৭ জন ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছেন।

১২৭ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপে আদালত বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী শুল্ক বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আরোপের এক্তিয়ার কংগ্রেসের (মার্কিন আইন পরিষদ); প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা এক্ষেত্রে সীমিত। আইইপিএ আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট কোনো দেশের ওপর শুল্ক আরোপ কিংবা প্রত্যাহার করতে পারেন, কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে বা পরিস্থতিতে প্রেসিডেন্ট এ আইন প্রয়োগ করবেন— আইনে সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।”

আরও পড়ুন:  প্রাথমিকে চলতি বছর ১৩ হাজার ৭৮১ শিক্ষক নিয়োগ

আদালত বলেন, সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর  অতিরিক্ত যে শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প—অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইইপিএ আইন মানা হয়নি

“কোনো দেশের ওপর আইইপিএ আইন প্রয়োগের জন্য কংগ্রেসের সুপারিশ থাকা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন আইইপিএ আইনের আওতায় যেসব দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন— অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কংগ্রেসের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়নি”, রায় ঘোষণার সময় বলেন আদালত।

এদিকে ফেডারেল আপিল আদালত রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেছেন, আদালতের এই রায় বাস্তবায়ন করা হলে তা যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন অর্থনীতিকে ‘ধ্বংস করবে’। রায়কে চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

সেই সঙ্গে তার দাবি, শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে তার নেতৃত্বাধীন প্রশান আইইপিএ আইনের অপব্যবহার কিংবা লঙ্ঘন করেনি।

আরও পড়ুন:  লতিফ সিদ্দিকীসহ আটক ১৬ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হচ্ছে

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, “আপিল কোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তাতে সব বিচারকের সম্মতি ছিল না। এটি একটি বিভক্ত এবং বেঠিক রায়। আদালতের এই রায় যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আমাদের দেশ এবং জাতীয় অর্থনীতি আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংস হয়ে যাবে।”

“শুল্ক প্রত্যাহার হলে তা হবে আমাদের দেশের জন্য শতভাগ বিপর্যয়। আদালতের এই আদেশ আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল করে দেবে।”

“কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই মনোবল হারালে চলবে না। আমরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করব এবং আদালত এটা ভালোভাবেই জানেন যে (চ্যালেঞ্জ করা হলে) যুক্তরাষ্ট্র জিতবে।”

২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপর ২ এপ্রিল বিশ্বের অধিকাংশ দেশের ওপর বর্ধিত হারে রপ্তানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তিনি।

আরও পড়ুন:  তুমি কি রাতে আদৌ ঘুমাও? সৌদি যুবরাজকে ট্রাম্পের প্রশ্ন

বর্ধিত শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি ও ভারসাম্যহীনতা দূর করতে এই শুল্কনীতি গ্রহণ করেছেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *