হাসপাতালে গায়ে পেট্রল ঢেলে আন্দোলনে আহতদের আত্মহননের চেষ্টা

রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের একটি অংশ গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহননের চেষ্টা করেছে।

বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে আহতরা পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরীকে অবরুদ্ধ করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিষয়ে ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল বিষপান করা চার যুবকের সঙ্গে আরো কয়েকজন আহত দুপুরের দিকে আমার কার্যালয়ে আসেন।

এ সময় তারা আমার বিরুদ্ধে একপক্ষের হয়ে কাজ করার অভিযোগ করেন।’তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে আহতদের নিজেদের মধ্যেও অনেক ধরনের কোন্দল আছে, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ করেন। তাদের ৪০ থেকে ৫০ জন আমার রুমে আসেন। সেখানে তারা নিজেদের মধ্যে গোলমাল করছিলেন, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন যে একদল অনুদান এনেছে, তাদের দেয়নি।

আরও পড়ুন:  বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো ৪ যুবকের
এ সময় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বিষয়টি জানাই।’জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘আহতদের অভিযোগ, তাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী নাকি আমি বিদেশে পাঠানোর নামের তালিকা করি। কিন্তু এটা তো হওয়ার কথা নয়। এখানে বিশেষজ্ঞ কমিটি আছে তারাই নির্ধারণ করে কারা বিদেশে যাবে।

এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।এ সময় আকতার হোসেন নামের একজন পেট্রল নিয়ে এসেছিল। এতে আমি ভয় পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বিষয়টি জানাই। এরপর সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলে তারা সরে যায়। এর আগেই আমি আহতদের একটা অংশের সহায়তায় কক্ষ থেকে বের হয়ে আসি’—বলেন তিনি।

ঘটনার বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা আতদের একজন বলেন, ‘গত দিন যারা আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন তারাই আজ পরিচালকের কার্যালয়ে আসেন। সেখানে নানা কথাবার্তা বলতে বলতে আবারও আত্মহননের চেষ্টা করেন। সঙ্গে পেট্রল নিয়ে আসেন। এখন সব ঠিক আছে।’

আরও পড়ুন:  নির্বাচন ছাড়া সরকারের পরিবর্তন বিএনপির দিবাস্বপ্ন- কাদের

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ‘তারা কেরোসিন-পেট্রল নিজেদের গায়ে ঢেলে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় আমরা গিয়ে তাদের কাছ থেকে বোতলগুলো নিয়ে নিই। পরে সেনাবাহিনী এসে সম্মিলিতভাবে তাদের বোঝানোর পর তারা চলে যান’—বলেন তিনি।

গত রবিবার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত চারজন জুলাইযোদ্ধা বিষপান করে আত্মহননের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘উনারা আদৌ বিষপান করেছেন কি না, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এটা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে যে উনারা যেটা পান করেছেন, সেটা আসলেই বিষ কি না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *