দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঝড়ের কবলে ভারতীয় বিমান

ভারতের ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট মাঝ আকাশে ভয়াবহ ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার (২১ মে) সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে শ্রীনগরগামী ফ্লাইট ৬ই২১৪২ এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় বিমানের সামনের অংশবিশেষ করে ‘নাক’ (নোজ)—গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় বিমানটিতে ২২৫ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। ঝড় শুরু হলে মাঝ আকাশে বিমানে প্রবল ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী, বিশেষ করে শিশুরা, ভয় পেয়ে চিৎকার ও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ফলে বিমানের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শ্রীনগরে জরুরি অবতরণ করে। ঝড়ের মধ্যে পাইলট তৎক্ষণাৎ ‘ইমার্জেন্সি’ সংকেত পাঠান শ্রীনগর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে।

আরও পড়ুন:  ১ যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াতে ইসলামী

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বজ্রপাতের আলোর ঝলকানিতে বিমানের ভেতর আতঙ্কিত যাত্রীদের মুখ।

ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফ্লাইটটি মাঝপথে শিলাবৃষ্টির কবলে পড়লেও পাইলট ও কেবিন ক্রু নির্ধারিত প্রটোকল অনুসরণ করে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন এবং বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয়।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর যাত্রীদের যত্ন নেওয়া হয় এবং তাদের আরাম নিশ্চিত করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বিমানটির ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের পরই পুনরায় উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হবে।

এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এদিন সন্ধ্যার পর দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়। ঘণ্টায় ৭৯ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়, সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত। এতে দিল্লির বিভিন্ন অংশে গাছ উপড়ে পড়ে, জলাবদ্ধতা তৈরি হয় এবং ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।

আরও পড়ুন:  কাটা শুরু হয়েছে আউশ ভাল ফলনে খুশি কৃষক

সেইসঙ্গে এদিন রাজধানীতে রেকর্ড গরম পড়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি। উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারণে ‘হিট ইনডেক্স’ বা অনুভূত তাপমাত্রা পৌঁছায় ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, এই আকস্মিক দুর্যোগের পেছনে ছিল হরিয়ানা অঞ্চলে সক্রিয় একটি সাইক্লোনিক সার্কুলেশন, যা পূর্ব-পশ্চিম অক্ষাংশ ধরে পাঞ্জাব থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্রতাই এই ঝড়কে আরও শক্তি জুগিয়েছে।

ঝড়ের কারণে দিল্লির বিমানবন্দরে একাধিক ফ্লাইট বিলম্বিত হয় এবং শহরের মেট্রোর ইয়েলো লাইনের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। পাশাপাশি, নোয়ডা শহরে বাতাসের দাপটে কিছু বিল্ডিংয়ের জানালা ও হোর্ডিং ভেঙে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *