দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের সময় ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে অভিযান পরিচালনা করে, তার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন বানিয়ান মারসুস’।
এই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ফেডারেল মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছে, ‘চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির অনুকরণীয় সাহস, সংকল্প ও সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ কৌশল ও প্রচেষ্টার পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
এতে আরো বলা হয়, ‘এবং অতুলনীয় নেতৃত্বের জন্য সেনাপ্রধানকে ধন্যবাদ।
এদিকে পাকিস্তানের আইএসপিআর জানিয়েছে, ফিল্ড মার্শাল র্যাংক পাওয়ার পর মুনির ‘এই সম্মান পুরো জাতি, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষ করে সামরিক-বেসামরিক শহীদ ও গাজীদের উৎসর্গ’ করার কথা জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার আস্থার জন্য কৃতজ্ঞ, যার জন্য লাখ লাখ আসিম তাদের জীবন উৎসর্গ করে।
ফিল্ড মার্শাল হলো একটি দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সম্মানসূচক পদ। এটি সাধারণত একটি পাঁচতারা পদ, যা জেনারেলের ওপরে অবস্থান করে।
এই পদে সাধারণত সরাসরি সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব থাকে না, বরং ব্যতিক্রমী সামরিক নেতৃত্ব, কৌশলগত দক্ষতা ও জাতীয় প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এটি প্রদান করা হয়।
মর্যাদাপূর্ণ হলেও ফিল্ড মার্শাল পদধারীকে সংবিধান অনুযায়ী অতিরিক্ত কোনো ক্ষমতা প্রদান করা হয় না।
জেনারেল মুনিরের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল আসিম মুনির পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন মাঙ্গলা অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল প্রগ্রামের মাধ্যমে এবং এরপর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টে কমিশনপ্রাপ্ত হন।
ব্রিগেডিয়ার হিসেবে তিনি নর্দান এরিয়াস ফোর্সের কমান্ড করেন এবং ২০১৭ সালের শুরুর দিকে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালে তাকে ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
এরপর তিনি দুই বছর গুজরানওয়ালা কোরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে কোয়ার্টার মাস্টার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
২০২২ সালের নভেম্বরে জেনারেল মুনির পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।
তিনি একমাত্র সেনাপ্রধান, যিনি উভয় গোয়েন্দা সংস্থা—মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স (এমআই) ও আইএসআইয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া জেনারেল মুনির পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সেনাপ্রধান, যিনি ‘সোর্ড অব অনার’ পুরস্কার অর্জন করেছেন।
সূত্র : বিবিসি, জিও নিউজ