বিনিময় হার (ডলার-টাকার মূল্য) আরও নমনীয় করার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে মতপার্থক্য চলছিল, তাতে শেষ পর্যন্ত সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে দেওয়া চলমান ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করতে রাজি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে একাধিক বৈঠকের পর এই সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ঋণের কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফ ইতিবাচক। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আটকে আছে। সমঝোতা হওয়ায় জুনে ঋণের বাকি অর্থ ছাড় করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি। ঋণের অর্থছাড় বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। পুরোটাই ছাড় হবে নাকি এক কিস্তি ছাড় করা হবে তা এখনো পরিষ্কার করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে ‘ক্রলিং পেগ’ নামে একটি নতুন বিনিময় হার পদ্ধতি চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রা বেচা-কেনায় আড়াই শতাংশ হারে বাড়ানো বা কমানো যায়। ক্রলিং পেগে বর্তমানে মধ্যবর্তী দর ১ ডলার ১১৯ টাকা। এর সঙ্গে বিদ্যমান আড়াই শতাংশের পরিবর্তে চার শতাংশ করিডোর দেওয়া হতে পারে। এই নিয়ম নিয়ে আগে আইএমএফ-এর সঙ্গে মতবিরোধ থাকায় ঋণের কিস্তি আটকে ছিল।
বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে আগামীকাল বুধবার। সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয় বিস্তারিত জানাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গভর্নর দুবাই থেকে সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর তিনটি কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আর ২০২৪ এর জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পায় বাংলাদেশ। ঋণের অর্থছাড় বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। বিপত্তি দেখা দেয় চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে। বিনিময় হার নিয়ে সমঝোতা হওয়ায় এটি সুরাহা হচ্ছে।